বিদ্রোহের দিন
-ঋতম সানা
বাতাসে ভাসছে আজ দেখি মুক্তির সুবাস
ভেঙে সকল বিভেদের শেকল, উঠছে গড়ে মানববন্ধন
জীবনের পঙক্তি যারা লিখবে নতুন করে
ছুয়েও যেতে পারে রামধনু আকা ঐ মুক্ত গগণ
যেই শোষকের শেষকথা ওদের নিকট ভাগ্যের পরিহাস
শুরু থেকে শেষ তাদেরই কব্জায় যখন বদ্ধ জীবন
মৌনতার ব্রত ভেঙে আজকে দেখি নিদ্রাহীন সব চোখ
প্রতিবাদের উন্মাদ সুরে নেচে উঠেছে দেখি সকল মন কেমন
আজ দূর থেকে দেখি পরিবর্তনের পদধ্বনী
একত্রিত সকল অস্তিত্বের নতুন করে লড়াইয়ে নামা
মিছিল স্লোগান প্রতিরোধের আহবান চারিপাশে
রণহুংকারী ঐ লাল চোখ, ভাঙা চোয়াল, শীর্ণ কলেবর, কীভাবে দিচ্ছে হানা
মানবে না বাধা, হাটাও সকল মন ভোলানো কথা
জ্বেলে স্পর্ধার মশাল, ছিড়ে গোলামির দড়ি
এগিয়ে আসে সংকল্প, ফেলে সকল বাহানা
রোজ রোজ দেখি ভাঙছে জীর্ণ সংস্কার
দুর্লভ রুটি অন্নও আজ দু’হাতে মেটাচ্ছে আহার
আজ চকিত ঐ সিংহাসন, ছিন্নভিন্ন রাজশাসন
কোথায় বড়বাবুদের সাহসী ভাষণ
আজ গুটিয়েছে পাত্তারি শোষনের কারবার
আজ নাকি বিদ্রোহের দিন, চলছে মহোতসব ক্লান্তিবিহীন
সকল ব্যর্থতা ভুলে এই সমাজের প্রকৃত মানে, আজ নতুন ছন্দে আসীন
জড়োসড়ো প্রথা, মিথ্যা রীতিনীতি ভুলে সকল নবীন
আজ মেটাবে বঞ্চিত সকল জঠরের ঋণ
চলে যাবো দেখে শেষ পরিণতি, এই শেষ রজনীর
শুনি বিদ্রোহীদের মহাভাষ্য, দেখি বিকৃত সভ্যতা ধ্বংসের কাহিনী
আমি দেখি এবার বদলের ইতিহাসে,
উঠবে নতুন ভোরের শপথে রাঙা সূর্য আগামীর
তখন প্রতিটা দিন শিশুদিবস প্রতিটা অসহায় শিশুর জন্য
ক্ষুধা, অস্বাস্থ্য, অশিক্ষা, দারিদ্রের মহামারী মুক্ত
সকল মাতৃক্রোড় হতে তখন, এক নতুন সভ্যতা নেবে জন্ম
দধীচির ন্যায় যে গরিবগুলোর জ্বলেছিল হাড়
আজ এই নতুন সমাজের শেকড়ে সাড়, ওদেরই ছাইভস্ম
শোনা যাবে শব্দ সকল ক্ষমতাধারীর আত্মসমর্পণ অতন্দ্র,
ঝোকাবে মাথা এদের সামনেই এই বিছিন্ন বিশ্বসমগ্র
আড়ি
-প্রদীপ চক্রবর্তী
কৃষকের লাঙ্গল-কাস্তে,
শ্রমিকের হাতুড়ি।
রাজমিস্তিরির হাতের কলায়
গড়ে ওঠে ঘরবাড়ি।
আমরা বসে মৌজ করি,
পাওনা গন্ডার হিসাব।
সভ্যতার মুখে ছড়াই,
অসভ্যতার তেজাব।
ওরা কাজ করে নগর প্রান্তরে,
আমরা খাচ্ছি মাখন,
চুনকালির দাগ তুলব বলে
মুখে ঘষছি বেসন।
সর্বহারা ঘোরায় চাকা,
আমরা চড়ি গাড়ি।
ভগবানের দোহাই দিয়ে
যুক্তির সঙ্গে আড়ি।