কবিতাগুচ্ছ ৬

কবিরা


Nov. 18, 2024 | | views :885 | like:0 | share: 0 | comments :0

বিধর্মীর ধর্মকথা

-ঋতম সাহা


অবিশ্বাসী আমি সেই সকল কাল্পনিক চরিত্রের প্রতি,

করে নত মাথা যাদের পদতলে মানুষ ব্যস্ত জীবনের প্রতিটি নিশ্বাসে।

মিথ্যা বিশ্বাসের বিভেদে, মানুষের বানানো ধর্মের ভীড়ে,

মিথ্যা নিয়মের নীচে পড়ে চাপা যুক্তিতর্কের অস্তিত্ব, অদূরেই।


সংস্কারের আদর্শ যেখানে হয় বিক্রিত ধর্মের বাজারে,

সেখানেও পায়নি খুঁজে ঈশ্বরকে কোনোদিন, তার পথ চেয়ে থাকা আর্তের হাহাকারে।


অনেকে রাখে তুষ্ট ঈশ্বরকে মেটাতে বৃহত্তর স্বার্থের স্বাদ,

তো কেও চায় ঈশ্বরকে পাশে কাটাতে সংসারের সামান্য অভাব।


তবুও পাইনি খুঁজে তাকে,

পাইনি খুঁজে আত্মহত্যা করা চাষির পরিবারে,

পাইনি খুঁজে দিনমজুরি করা শ্রমিকের অভাবের সংসারে,

পাইনি তাকে কাতর স্বরে চাওয়া ধর্ষিতা মেয়ের শেষ বিচারে।

যুগ যুগ ধরে চলা রাষ্ট্রের হাতে প্রতারিতদের ভাগ্য লেখেনি সে,

পাইনি খুঁজে তাকে যখন একলা শিশু যখন করে ব্যয় শ্রম গোটা পরিবারের মুখ চেয়ে,

খুঁজে পাইনি তাকে বুড়ো ভিখারির ক্ষুধার জ্বালায় অনিশ্চিত জীবন সংশয়ে।


ঈশ্বর যদি সকল মানুষকে সন্তানসম সমান ভালোবাসে,

তাহলে কীভাবে হয় একশ্রেনী শোষক , আরেকশ্রেনী শোষিত ভাগ্যের পরিহাসে।


সবাই বলে চেঁচিয়ে নাকি তাদের ধর্মের শেখানো ভালোবাসা প্রধান,

তর্কে জড়ালে ধর্মের আড়ালে ,তারায় আবার বোঝায় মানুষের চেয়ে ধর্ম মহান।


করলে অপমান কোনো ধর্মবিশ্বাস, আসে তেড়ে সকলে নাকি ধর্মরক্ষায়,

এতই দুর্বল নাকি তাদের আস্থা,  এই সহজেই কি ভাঙার ভয়?

তাহলে কোনো মানুষ কীভাবে নেয় বেছে সেই বিশ্বাসে নিজের জীবনের আশ্রয়।


মন্দির মসজিদ গির্জা, ভাঙো কিমবা গড়ো, নেই তাতে আমার আগ্রহ,

কিন্তু যেদিন ধর্মের নামে করলে ধ্বংস নালন্দার মত হাজার শিক্ষাগৃহ,

সত্যই সেদিনে হয়েছিলো ঠুনকো তোমাদের আস্থার বিগ্রহ।


সকল ধর্মস্থান, ধর্মপ্রাণ আদর্শ হয়ে ওঠে অচেনা অপ্রয়োজনীয়,

যখন দেখি মানুষ মরে মানুষের হাতে,

সেখানে ঈশ্বরের নামের অস্তিত্ব হয়ে ওঠে সত্যই অসহনীয়।


কোনো ধর্মতেই শ্রেষ্ঠত্ব খুজিনা আমি, সবাই নিজের স্বার্থে বাঁচে,

যতই বলুক মহান নিজেদের, অপর ধর্মে ঠিক গাফিলতি খোঁজে।


কবি যখন লিখেছিলেন, ধর্মকারার প্রাচীরে হেনে আঘাত এই অভাগা দেশে জ্ঞ্যানের আলোক আনো,

ভাবেননি তিনি এই সত্য রয়ে যাবে কেবল কবিতায় গাঁথা, আসল আদর্শ অন্ধবিশ্বাসে চাপানো।


এ হৃদয়ে নেই ধর্মের ভয়, নেই জাতপাতের কোনো সংশয়,

বুঝি কেবল মানুষের ভালো অথবা খারাপ,

তাই বিশ্বাসের প্রতি প্রশ্ন হোক সকলের

গরিবের জীবনভর দুর্দশা ঠিক তার কত জনমের পাপ।


সে যদি নাই জানে তার পূর্বজন্মের স্মৃতি, কি করেছিলো সে ঠিক না ভুল,

তাহলে পাপপূণ্যের নামে কেন ঠকানো হয় তাদের,

কেন সারাজীবন ধরে গুনবে তারা বঞ্চিত অধিকারের মাশুল।


পৃথিবীতে হাজার ধর্মের নামে হাজার রকম প্রথা,

হাজার বিশ্বাসের ভীড়ে কেবল নিজেকেই তুষ্ট রাখার চেষ্টা।

যেখানে ধর্মের বেড়াজাল গড়েছে বারবার মানুষের সম্পর্কে বাধা,

সেখানে তবুও আমি দেখেছি , দেখতে চাই বারবার ,

মানুষ থাকুক মানুষের পাশে পেড়িয়ে হাজার ধর্মের মাথাব্যাথা।


ধর্ম খেয়ে ভরেনা পেট, জাত কি দেখা যায় চোখে,

ধর্মীয় রোষ গড়েছে প্রতিরোধ এক সুস্থ সমাজের সম্মুখে,

সঠিক শিক্ষা, সাথে যুক্তি ব্যয়

আনে জগত চেনার নতুন উপায়,

আঁধার হতে দেখো চেয়ে,  বিভিন্নতার  সৌন্দর্য্য কত এই ভেদাভেদ পেরিয়ে

হবে তৈরি এক নতুন সমাজ, চেতনায় গড়বো প্রতিরোধ সকল গোঁড়ামির বিরুদ্ধে,

বিশ্বাস থাকুক নাহয় তোমার অন্তরে, স্থান দিওনা তাকে উগ্রতারে আড়ালে,

দেখো ফুটবে কত নতুন কুড়ি সকল বাধা পেরিয়ে, এই সুস্থ সমাজের অন্তরালেই।


রক্ষাকবচ

-প্রদীপ চক্রবর্তী


জীবনের কথা বলো

মৃত্যুর নয়,

যুক্তির সাথে থাকো

দুর করো ভয়।


ৠণী মোরা প্রকৃতির কাছে

কর তাই শোধ,

সোজা কথায় প্রকাশিত

নিজ মূল্যবোধ।


ঝড়-তূফান-বজ্রপাত

পশ্চাতে বিজ্ঞান,

পরিস্থিতির বিচারে

বাড়াও নিজ জ্ঞান।


নিজেই রক্ষা কর

নিজের-ই প্রাণ,

বিপদ থেকে বাঁচাতে

আসবে না ভগবান।


লকডাউন ৩

-জামাল আনসারী

মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে যমদূত দাঁড়িয়ে দুয়ারে

লকডাউন। আবালবৃদ্ধবনীতার গৃহবন্দী জীবন।

মাক্স, ছাড়া রাস্তা ঘাটে চলাফেরা নিরাপদ নয়,

অসাবধানে চলে যায় প্রাণ, কাঁদে আপনজন।


নিউজ চ্যানেলে, রেডিওতে এখন মুখ্য খবর

আতঙ্ক, উদ্বেগে জড়সড় ,বেলাগাম মৃত্যুহার ।

কর্মহীন দিন মজুরের হেঁসেলে পড়ছে টান―

করোনার উর্ধমুখী গ্রাফে পতন শেয়ার বাজার।


সোশ্যাল ডিসটেন্স। লাগু আদর্শ আচরণবিধি

অজ্ঞতার কারণে বাড়ছে পারস্পরিক অবিশ্বাস।

সমাজতান্ত্রিক, ধনতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক সব দেশে

দাপিয়ে বেড়াছে শুধু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস।


ঘরে ঘরে মৃত্যু ভয়, কড়া নাড়ছে করোনা ভাইরাস

কি হবে? কি খাবে মানুষ? তাড়া করছে আতঙ্ক ―

ডাক্তার ,নার্স বিজ্ঞানী দিন রাত এক করে ব্যস্ত

পরিষেবা দিতে, তবুও মিলছে না কোরোনার অঙ্ক।


হিংসা নয়, ঘৃণা নয়। চাই সবার একটু সহযোগিতা।

কোরোনাকে হারাতে হলে, মানুষের সচেতনতা চাই।

আসুন,সকলে মিলেমিশে একসাথে লড়াই করি ―

জিতব আমরা। হারবে কোরোনা। ভয় নাই,ভয় নাই।



লকডাউন ৫

-জামাল আনসারী


একুশটা রজনী  কবেই কেটে গেছে,দেশে লকডাউন চলছে..

বাবুইপাখির বাসার মত হৃদয়ের মণিকোঠায় অঙ্কিত স্বপ্নগুলি

আকুল পাথারে একে একে বিলীন...

কথা ছিল, একুশটা দিবানিশি অতিক্রম শেষে

আসমুদ্রহিমাচলে উঠে যাবে সোশ্যাল ডিস্ট্যান। লকডাউন।

নীল আকাশে উদিত হবে দুর্যোগ-মুক্ত প্রভাতের নবারুণ।

বদ্ধ ঘরের আগল ভেঙে মানুষ গুলি আবার পথে ঘাটে মাঠে...

রৌদ্র ঝলমলে ভিজে মাটির গন্ধ মেখে  স্বস্তির শ্বাস নেবে।

কিন্তু না। এই পোড়া দেশে আর মীরাক্কেল ঘটল না।

একুশটা রজনী কেটে গেলেও লকডাউন উঠল না।


পাড়ার দর্জি কাকু অমলের মতো জানালার খিড়কি খুলে

দুচোখ ভরা অনাবিল আশার নিশ্বাস ফেলে বলেছিলেন

আর দুই দিন। আর মাত্র দুই দিন আমাদের কষ্ট!!

তারপর। শহরের কোনায় ওই দর্জি দোকানটা খুলতে পারব।

জানিস, ঐ ছোট্ট দোকানটায় আমার সংসারের রেলগাড়ি।

অনেক কাজ। কাজের পাহাড় জমে আছে।

আর না খেয়ে অনাহারে মৃত্যু  যন্ত্রনা আর সইতে হবে না।

কিন্তু সেই দুই দিনও গুটি গুটি পায়ে বিদায় নিল।

দোকান খুলল না। লকডাউন । লকডাউন ।

চলছে গোটা দেশে বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রাম।

বারংবার প্রশ্ন বানে বিদ্ধ হচ্ছি.. দর্জিকাকু এখন কি করছে?

বেঁচে আছে তো! যুদ্ধ শেষে কি আবার দেখা হবে??

না। দেখার কোনো উপায় নাই। ঘরবন্দি।

দেশে লকডাউন। রাস্তায় পা ফেললেই বিপদ।


ছোট কাকিমা, সেদিন হাস্য মুখেই সুখবরটা জানিয়েছিল..

এই লকডাউন শেষ হলেই আসবে ...

জ্যোৎস্না আর আকাশের চার হাত এক হবে।

মনে পড়ে, ঘড়ির কাঁটার ছন্দে পা মিলিয়ে চলতে পারলে


বহুদিন পূর্বেই সুখের সাগরে জলকেলিতে মগ্ন হত দুই তরী।

কিন্তু এখন লকডাউনের অদৃশ্য দেওয়াল হৃদয় জুড়ে

জ্যোৎস্না ও আকাশের সীমারেখা।

একুশটা রজনী কেটে গেল, দেশে  লকডাউন চলছে।

আরো কতদিন চলবে?? কারো নেই জানা।


কথা ছিল, করোনা যুদ্ধে একুশ দিনেই জয়ী হবে আমার দেশ।

অন্তর্দাহ সহ্য করে হাসিমুখে কোটি কোটি কৃষক শ্রমিক দিনমজুর

অক্ষরে অক্ষরে মান্য করেছে সরকারি নির্দেশিকা...

একুশ দিনে কত প্রান্তিক মানুষ অভুক্ত থেকেছে?

লক্ষ লক্ষ কৃষক হয়তো পায়নি উৎপাদিত শস্যের ন্যায্য মূল্য

পরিবহনের অপ্রতুলতা, মাঠেই পচেছে তাজা ফসল।

তবুও দাঁতে দাঁত চেপে মেনেছে লকডাউন...জানে অন্তর্যামী।

অতীত পর্যালোচনা, করোনার ইতিহাসে চোখ মেলি...

কার দোষে? নভেল করোনা ভাইরাস উড়ে এল দেশে?

অচিরেই  মহামারীর শাখা প্রশাখা মেলেছে সারা ভারতজুড়ে?

এটা কি ভারত সরকারের নির্বুদ্ধিতা নয়?

প্রশ্ন অনেক। উত্তর পাওয়ার নাই অবকাশ।


তবুও আশার প্রদীপ হাতে নিয়ে দুচোখে  সুদিনের প্রত্যাশা দেখি

জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে মানুষ মিলিয়েছে কাঁধে কাঁধ

চলছে আসমুদ্র হিমাচল জুড়ে তুমুল কোরোনা সংগ্রাম

আশা রাখি,জয়ী হবেই একদিন মানুষ। মৃত্যু ঘটবেই করোনার।




বন্দীর আশা

-শ্রেষ্ঠী দে


হোক আমার বদ্ধ জীবন

হই না আমি খাঁচার পাখি,

নতুন পথেই চলবে জীবন

এই আশাতেই কেবল বাঁচি।

বছর শেষে বছর ঘোরে

আসে দিনের শেষে রাত্রি,

সুখের পাশেই দুঃখ বাঁচে

জীবন তো নয় স্বপ্নপুরীর যাত্রী!


চোখ গুলো আজ ধাঁধিয়ে ওঠে

হাতছানি দেয়, রংবেরঙের স্বপ্ন,

পড়ন্ত বেলায় ঘুম ভেঙে যায়

দেখি জীবন শুধু হতাশাতেই মগ্ন।

আজ আকাশ ভরা কালো মেঘ

আর জীবন ভরা বিষাদ,

সঙ্গে দোসর মাতাল বাতাস

মানুষ কেবল ঠুটো জগন্নাথ।

সময় চলে নিজের তালে

হাপিয়ে ওঠে জীবন,

পায়ের শিকল ছিন্ন হবে

এই আশাতেই বাঁচে মন।।





অবক্ষয়

-তারা কয়াল


কোথায় শিক্ষা, কোথায় সমাজ

কোথায় বা আমাদের বিপ্লব!

আস্তরনে ঢাকা পড়ে গেছে,

অহংকারের কালো ছাপ।

স্বপ্নের ঘুমে তলিয়ে গেছে

বিশ্ব বাংলা জুড়ে।

নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে সর্বক্ষণ

কল্পনার, আশার সমুদ্রে।

আসছে সেই গভীর জোয়ার,

তলিয়ে দিতে বিশ্বজুড়ে।


কোথায় শিক্ষা, কোথায় সমাজ

কোথায় বা আমাদের বিপ্লব!

ভাবনার জগতে মেতে আছি সবাই,

মধুর আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দে।

পরিবর্তনটা কি শব্দ?

ভুলে গেছি বহুদিন আগে।

মূর্খের মতো সান্তনা দিচ্ছি

বেশ!...দিব্যি!... চলে যাচ্ছে বলে।

ভবিষ্যত প্রজন্ম উচ্ছন্নে যাচ্ছে

কি হবে তা চিন্তা করে!


কোথায় শিক্ষা, কোথায় সমাজ

কোথায় বা আমাদের বিপ্লব!

লজ্জা লাগে বলতে আমার

বাচ্ছি শিক্ষিত সমাজে?

যে মাটিতে বিপ্লবীরা

ডাক দিয়েছিল শিক্ষার ব্যাখ্যা তুলে।

ভুলে যাচ্ছে সবাই

কষ্টে গড়া সেই অধিকার।

কঠোর পরিশ্রম ও পরাজিত হচ্ছে

বর্তমান পরিস্থিতির ভিত্তিতে।


কোথায় শিক্ষা, কোথায় সমাজ

কোথায় বা আমাদের বিপ্লব!

স্বার্থপর ওহে মানব সমাজ

লজ্জা কি আছে তোমাদের?

কষ্টে পাওয়া এই জগত

মূল্যহীন হয়েছে তোমাদের কাছে।

উল্টে দেখো পাঠ্যের পৃষ্ঠা

সংগ্রাম করেছে কতো।

শিক্ষার আলো তুলতে গিয়ে,

শহীদ হয়েছে কত-শত।

কোথায় শিক্ষা, কোথায় সমাজ

কোথায় বা আমাদের বিপ্লব!



গৌতমের প্রতি

-ঋতম সাহা

লিখতে বসেছি এক সন্ন্যাসীরাজার পরিচয়

জগতে এরূপ চরিত্রের হবেনা কোনোদিন বিকল্প,


সংসারের অমানিশায় সে এনেছিলো আলো

বোঝা তাকে সত্যিই জটিল, যেমন আমিও বুঝেছি তাকে অল্পস্বল্প।


দেয়া হয়েছিলো তাকে শৈশবেই রাজত্বের লক্ষ্য অব্যর্থ,

নামকরণে মুখর রাজমহল, পিতা দিলেন নাম সিদ্ধার্থ।


রাজা-রাজত্ব সকল বিলাসিতা হতেই সে ছিলো অধিক দূরত্বে

রাজকুমার হয়েও কিনা বারবার বলতেন কথা যুদ্ধ বিনা মনুষ্যত্বে।


শুরুর জীবনেই ঘটলো সমাপ্তি মা মহামায়ার জীবনী,

নামে জুড়লো গৌতম, গৌতমী হয়ে উঠলেন তার প্রকৃত জননী।


পিতা চেয়েছিলেন ফেরাতে বিশ্বাস বালকের রাজতন্ত্রে,

শৈশবেই দক্ষ বালক গনিত, বিজ্ঞ্যান আর বেদমন্ত্রে।


শিক্ষকরা পেলেন দায়িত্ব, হলো গৌতমের শিক্ষা শুরু,

শিশুরূপে আচার্য্য পেয়ে হলেন অবাক, ধন্য সকল গুরু।


দেখিয়েছিলে পশুপ্রেম, তীরবিদ্ধ হংস বাঁচিয়ে আপন জেদে,

করলে বিয়ে যশোধরাকে, ভালোবেসেও শেষে কিনা যুদ্ধ জিতে।


ভেবেছিলো পরিবার পুনরায় মহলে দেবে মন

ফিরবে তোমার সংসারে আস্থা,

তবুও তুমি সেই উদাসীনই, ছাড়লে সংসার,

অনুভবে জনজাতির দূরাবস্থা।


গুরু কালামা ও রামাপুত্তা হতে কঠোর যোগ তপস্যায় হলে পুরুষ সিদ্ধ,

ভাঙলে জীর্ন সন্ন্যাস চক্র, গড়লে নতুন তুমি, তুমিই বুদ্ধ।


জটিল রোগে বৃদ্ধ স্পর্শে, ভেঙেছিলে ভ্রান্ত ধারণার বিভীষিকা,

তুমিই করেছিলে চিহ্নিত সকল মানবজীবনের মরীচিকা।


তুমি উদ্ধারে জাগতিক সত্য,

শিখিয়েছিলে রাখতে বিশ্বাস অন্তর্হিত সত্যের অস্তিত্বে,


জীবনের ঝটিকাসফরে শিখেছি ভালোবাসা,

ভক্তিতে নিমজ্জিত কেবল আমি বোধিসত্ত্বে।


পতিতাকে দিলে স্নিগ্ধতা, বিশ্বাস তার মাতৃত্বে,

বিষন্ন মন এখনো পায় বিশ্বাস তোমার অস্তিত্বে।


সিদ্ধিলাভে চিনলো জগত তোমারে, আর্তপীড়িত হলে তোমা দ্বারে আগত,

তুমি হলে পরিত্রাতা তাদের, জীবন চেতনায় তোমাকে পেলাম তথাগত ।


নাস্তিকতায় বিশ্বাসীদেরও পছন্দের তুমি,

নিজের ধর্ম বাঁচাতে ব্যবসায়ীরা বানিয়েছে তোমাকেই দেবতা,

শিখিয়েছো ত্যাগিতে অন্ধবিশ্বাস, জীবনে যুক্তি প্রধান

জরাজীর্ন সকল ধর্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে চলেছে তোমার যুদ্ধ সর্বদা।


শত শত আঘাতের পরেও, লক্ষ্যে অবিচল তোমার আদর্শে চলা শিষ্য,

তোমার দর্শনে অটূট তারা, এখনো বিঘ্নিত হতে দেয়নি তোমার উদ্দেশ্য।


কত রাজা ছাড়ে রাজত্ব, আপন করে তোমায় কাটিয়েছে যুদ্ধের কান্তি,

তোমার রাজত্বেই ফলেছে দেশমাটির সীমানা পেড়িয়ে  কেবল শান্তি।


শিখিয়েছো উপায়, দমাতে অশান্ত হৃদয় অন্তরের সকল যুদ্ধ,

অষ্টাংগিক মার্গ দিয়েছো আমাদের, কেবল এক এবম অদ্বিতীয় বুদ্ধ।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929