ধর্মের চাকা ঘুরছে আজও
- অ শো ক দা স চা র্বা ক
খুব অতীতে 'হিন্দু' বলে
ছিলনা কেউ আগে,
সবাই তখন ' মানুষ ' ছিল
আদিম সেসব যুগে।
সব মানুষের জন্ম একই
লুসি* মাতার পেটে,
জানতোনা তাই কি কার ধরম
প্রাচীন পৃথিবীতে।
লুসির রক্ত সবার শিরায়
বইছে পরম্পরা,
তাহার সাথীর বীর্যে সৃজন
মানব দেহের ধারা।
ছিলোনা তাই জাতের বিভেদ
সেই ভায়েদের মাঝে,
জড়িয়ে ধরতো পরস্পরে
নাচে গানে কাজে।
মানবধর্ম ছিল শুধু
সবার সাদা মনে,
ছিলোনা তাই দেবদেবীরা
ধরার কোন কোনে।
সত্যি স্বর্গ ছিল সেথায়
নয়কো সে দেশ মায়া,
নরকভয়ে কাঁপতোনা কেউ
কল্পে যমের কায়া।
কালে কালে ঠগবাজেরা
দেবের জন্ম দিলো,
স্বর্গলাভের লোভ দেখিয়ে
ধর্ম সৃজন হলো।
সেই সময়ে জন্ম নিল
চতুর পুরুত যত,
ধরা জুড়ে এলো তখন
ধর্ম শত শত।
হিন্দু হলো, জৈন হলো
হলো খিরিস্তান,
শাস্ত্র গুজব ফেঁদে হলো
সৃষ্টি ভগবান।
মানবধরম হারিয়ে গেল
কপট ধর্ম এলো,
বিলোপ হলো মানবজাতি
ধর্ম হলো কালো।
জিজ্ঞাসিলে কেউ বলিল
"হিন্দু আমি", কেউবা "মুসলমান"
বললোনা কেউ "মানুষ আমি -
পঞ্চভূতের প্রাণ"।
এক ধর্মী উঠলো বলে
তার ভগবান সেরা,
অন্য সাধু বলে "ওটার
মাথাটা কর ন্যাড়া,
পরের ধর্ম ভয়াবহ
ওদের করো আড়ি,
আপন ধর্ম রাখতে ওদের
মাথায় মার বাড়ি।”
কেউবা আবার বলে দেখি
সেজে বামুন কায়া,
“অব্রাহ্মণ নিচু জাতি
ছুঁইনা ওদের ছায়া।”
সরল মানুষ ধর্মমোহে
ভায়ের গলা কাটে,
সেই সুযোগে শাসক পুরুত
ব্যবসা করে হাটে।
সেই ট্রেডিশন চলছে আজও
ভিন ধর্মী মরে,
শাসক পুরুত রক্ত চোষে
ধর্মের কল ঘোরে।
" Religion was invented when the first con man met the first fool" - Mark Twain
(ধর্মের আবিষ্কার হয়েছিল যখন প্রথম ঠগবাজ প্রথম বোকা মানুষের সাক্ষাৎ পেয়েছিলো)
অশোকদাস চার্বাক, হনলুলু, আমেরিকা ৭/১৭/১৮
* এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সব চেয়ে প্রাচীন সাড়ে তিন মিলিয়ন বছর পূর্বের মানবীর ফসিল - বর্তমান পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষের আদি ঠাকুমা - সূত্র "LUCY OF ETHIOPIA" Google
মানুষ হও
স জ ল কা ন্তি টি কা দা র
আমাকে তোমরা হিন্দু বোলোনা
বোলোনা মুসলমান
বোলোনা আমায় বৌদ্ধ জৈন
বোলো না গো খ্রীষ্টান।
তোমরা শুধু আমাকে একটু
মানুষ নামেতে ডেকো
তাতেই আমি বেশী খুশী হবো
এটুকু মনেতে রেখো।
ধার্মিক হতে চাই না বন্ধু---
মানুষ হতেই চাই।
“সবার উপড়ে মানুষ সত্য
তাহার উপড়ে নাই।”
এই কথাটি জেনেও আমরা
তবু যে বিভেদ করি
ধর্ম জাতি আর বর্ণ নিয়েই
হিংসা প্রাচীর গড়ি।
ভগবানকে আমরা দেখিনি কখনো
কোথায় থাকেন তিনি?
মানুষকে কিন্তু দেখেছি বন্ধু
মানুষকেই আমি চিনি।
মন্দির মসজিদে ওড়ে যে টাকা
গীর্জা ভরে শুধু উপহারে
এদিকে দেখি পথের শিশু
পচে মরে অনাহারে!
ধর্মের নামে রক্তের খেলা
মানুষ যে পায় ভয়
আমরা আজও মানুষ হইনি
এতে অবাক হতেই হয়!
তাইতো বন্ধু এসব দেখেই
বড্ড খারাপ লাগে
ধার্মিক যদি হতে চাও তুমি
মানুষ হওগো আগে।
নিয়ম
প্র দী প চ ক্র ব র্তী
আকাশের সূর্য -তারা
এক নিয়মেই চলে,
ছন্দোবদ্ধ জীবন যাপন
যুক্তির কথাই বলে।
মহাকাশের দুনিয়াতে
নেই ভাগ্যের হাত,
নিয়ম মেনেই দিন কেটে যায়
কেটে যায় কত রাত।
পৃথিবীর হোমো সাপিয়েন্স
বানায় যত নিয়ম,
ধর্ম নিয়ে নৃত্য করে
দেখায় কত-ই ভড়ং।
আমার ধর্ম
সু ম ন বি শ্বা স
জীব, জড়েতে ধর্ম আছে; ধর্ম বিহীন কিচ্ছু নাই,
প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম মানে— হিংসা, বিভেদ, বিবাদ চাই।
মানুষ বানায় উঁচু, নীচু; জাত ভেদাভেদ রয় যে তাই,
গোনার বেলায় দলে আছে; বাস্তবে অচ্ছুত পাই।
স্বজনপ্রীতি কাকে বলে, ধর্ম দেখে যায় শেখা,
সবাই সমান নাই সেখানে; গ্রন্থে এমন পাই লেখা।
লোভ আর ভয়ে কাজ করে সব, পরকালের চিন্তাতে,
মূলে ভবে ধন গড়ে যায়; মানুষ পথে হাত পাতে।
ধর্মঢালে গুষ্টিসুদ্ধ, লুটেপুটে খায় ঢপে,
সকল মন্দকাজে থাকে; ফের সারাদিন নাম জপে।
এইপারে না ওইপারে সুখ; এই বলে বয়ান ব্যাচে,
ভণ্ডের হয় বিলাস জীবন; বোকা নাচে তার প্যাঁচে।
ভিক্ষে দিয়ে পুণ্যি কেনে; ছবি শোয়ায় রাজখাটে,
প্রাসাদসম ‘স্রষ্টার ঘর’; পরজীবী সেই হাটে।
পরের ভাতে বেগুন দিয়ে, খায় চিরকাল পালজুটে,
তবু আসন বজ্জাতে পায়; শ্রমজীবী হয় মুটে।
অভিশাপ আর আশির্বাদের ভাণ্ড মেলে ধর্মতে,
দ্বিচারী হয় ধর্মধারী; তফাৎ কথায়, কর্মতে।
আমার ধর্ম কৃত্রিম নয়; কোত্থাও তার নাই ফাঁকি,
আমার ঈশ্বর শৃঙ্খলে নাই; যখন-তখন তাই ডাকি।
সুমন বিশ্বাস, হিদিয়া (৯২১০), অভয়নগর, যশোর।