আশ্চর্য ভাতের গন্ধ
-বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
আশ্চর্য ভাতের গন্ধ
রাত্রির আকাশে
কারা যেন আজো ভাত রাঁধে
ভাত বাড়ে, ভাত খায়।
আর আমরা
সারা রাত জেগে থাকি
আশ্চর্য ভাতের গন্ধে
প্রার্থনায়, সারা রাত
শাশ্বত
-অনার্য
ঊষার আলোর আহ্বানে নতুনের জাগরণ,
তৃণের শীশে শোভিত জীবন ক্ষণিকে স্খলন।
মায়ার পৃথিবী ভুলে যায় মায়া। একাকিনী জননী
খুঁজে ফেরে তার নয়ন মনি দিবস- যামিনী।
ভগবান, সকলই করিয়া থাকো মঙ্গল সাধনে!
পরম যতনে কাছে টেনে লও অমৃত বন্ধনে।
দয়ার সাগর প্রেমের আধার পুরুষোত্তম সত্য,
সকলই তোমার অধিন যবে তুমিই নিয়ন্তা নিত্য,
তবে কোন দোষে, কোন আক্রোশে সাঁজা দাও নির্দোষে?
আসলে তুমি, তুমি বলে কিছু নাই, চরম সর্বনেশে।
তবু ভিখ্ মাগে শতবার যত নির্বোধ দুর্বল,
সর্বজনীন কুসংস্কারে ভরসা অবিচল।।
এখানে সৃজন জীবন-প্রেম, মানুষ ও মনন,
এখানেই সব আনন্দ- হাসি রিক্তের বেদন।
সব দিয়ে সব কেড়ে লয় এই জগৎ-ঈশ্বর,
এই শাশ্বত-সত্য জানি তুমি-আমি- আর আর!
হৃদকুণ্ড
-মিঞোরেগা
ভীষণ ভারী পাদুকায় হাটছি
আপন মনে—পৃথিবীর বুকে,
শক্ত হাতে আঁকা তুফানের বর-পরঙ গল্পের পেইন্টিংয়ের মত
দুঃখগুলোকে অবশেষে রেখে।
ব্যস্ত রাস্তায় অবরোধ করে আছে
ট্রাফিক পুলিশের মত—আমার হৃদকুণ্ড
সাজের বৃষ্টিজলে, দূরে ঠিকানা ঘোলাতে
এই সবুজ যথাকালে, ঠিকানা সিদ্ধান্ত করে
সে বসে থাকত নীরবে, ভাবুক অথচ কী যেন খুঁজছে—।
এই দশকে বেশি আর হয়তো এগোনো যাবে না
আলো বিষণ্ণতায় মিশে গেছে
নাগরদোলার গানগুলো আঁধারে ভাসে
গাইতে গিয়ে ক্লান্তি চলে আসে
চেষ্টা করেও হয় না, হৃদকুণ্ড কম্প তৈরি করে
এ যাত্রা এভাবে থেমে যাবে।
রেঙ্গুন, মিয়ানমার
ওঠরে ওঠ দলিত সমাজ
-সজল কান্তি টিকাদার
ছোট্টো শিশুর প্রাণ যে গেলো
বর্ণবাদের বিষ নজরে
নয়নে এবার বহ্নি জ্বালা
থাকিসনা আর চুপটি করে।
ওঠরে ওঠ দলিত সমাজ
পুড়িয়ে দে সব মনুর বিধান
নইলে কিন্তু এই আগুনেই
যাবে আরো শিশুর প্রাণ।
যতই বলুক বামুনরা সব
আমরা সবাই সমান মানুষ
আসলে ওসব লোক দেখানো
ওসব কথা মিথ্যে ফানুস।
মানবিকতা নাইকো ওদের
জাতকে রাখে সবার আগে
কত যে দলিত প্রাণ হারালো
সেসব খবর কে আর রাখে?
ভুলিসনেরে ওদের কথায়
দেব দেবী সব ফেলনা ছুড়ে
দেওয়ালে পিঠ ঠেকেই গেছে
লড়াই কর এবার ঘুরে।
জল ছুঁলে যে প্রাণ নিয়ে নেয়
এমন ধর্ম চাইনা আর
বর্ণবাদের মধুর কথায়
ভুলিসনে আর খবরদার।
বাঁচার মতই বাঁচরে তোরা
পায়ের তলায় থাকিসনে
এই ভারতেই জন্ম তোদের
ভয়টা মনে রাখিসনে।