কবিতাগুচ্ছ ১৬

কবিরা


Nov. 20, 2024 | | views :458 | like:0 | share: 0 | comments :0

আরোগ্য

-প্রদীপ চক্রবর্তী


ধর্ম নিয়ে অনেক লড়াই

ধর্ম নিয়ে অনেক ভাষণ,

ধর্ম ধর্ম  কর কেন ?

ধর্ম  মানেই চরম শোষণ।


প্রকৃতির রোষাণলে

যখন আসে বিপর্যয়,

ধর্ম খায় গড়াগড়ি

ধার্মিকরা পায় যে ভয়।


বিজ্ঞানকে মেনে চল

পাবে মনে অনেক আরাম,

যুক্তিবাদী হলে পরেই

সেরে যাবে ধর্ম ব্যারাম।







যেমন কর্ম তেমন ফল

-জামাল আনসারী


কি যে বইল্যব ভাই, গরিবলকের জন্মটাই বৃথা,

সকাল থ্যেইকা বেলাডুবা তক্কো বাবুঘরে খাইটে খাইটে

কমর-কাখ্যাল ধরাই দিলে কপালে জুইটবেক সাতকুড়ি টাকা।

ত,এই টুকু টাকায় কি হবেক? নুন-তেল-চাল-ডাল! কিনতেই কুলাই নাই

ইদিকে নুনুর মাই, মুখটা ফুঁল্যাই আছে, ছুটু বিটিটারও দমে রাগ...

কালী পূজায় নুতন শাড়ি চাই।নতুন জামা কাপড় চাই।


টাকা পয়সা তো হাতে নাই,তাও নুনুর মাই-কে বলি,আর দিনা দুয়েক সবুর কর!

বাবুঘরের টাকাটা একবারে হাতে পালেই সবই কিনে দিব।টুকু ধর্য্য ধর।

ই জামানায় লিখাপড়ার কানাকড়িও দাম নাই হে।যতই ডিগ্রি থাকুক।

দাম আছে ঐ ন্যেতা-মন্ত্রী গুল্যানের।আর দাম আছে বাবাজি- মাতাজিদের।

শালা সব ভন্ডের এক রা। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।সে যতই লকে দেখুক।

ন্যেতা গুল্যানের লাজ-লজ্জা, হাইয়া-শরম কিছুই না। সব শেষ।


কেউ কেউ আবার বলে, "যেমন কর্ম তেমন ফল।"

ত, বলছি ফলটা কি শুধু ন্যেতা-মন্ত্রীদের ঘরেই ধরে? গরিব লকের ঘরে নাই কেনো?

নেতামন্ত্রীরা মিনিটে মিনিটে পেঁদা কথা বল্যে, দেশের লকগুল্যানকে ভুল বুঝায়।

সেই জন্যই কি উহারা কোটি কোটি টাকার মালিক? গাড়ি বাড়ি, টাকা কড়ির পাহাড় জমায়।

আর গরীব লক সকাল থ্যেইকা বেলাডুবা তক্কো বাবুঘরে খাইটে খাইটে

মাথার ঘাম পায়ে ফেইল্যে, কমর-কাখ্যাল ধরাই দিলেও ফল নাই।

গরিব গরিবেই থাকে।কুনু পরিবর্তন নাই।খাইটে খাই আর  ছিঁড়া খাইতে ঘুমায়।

কর্মের কি পরিহাস! তাথেও ধর্মের সেই এক কথা, , "যেমন কর্ম তেমন ফল !"


হবে তোমার সর্বনাশ

-রবিন তালুকদার


মেয়ের বাবা চিন্তায় আছে,

নুতন জামাই তার মাস্টার!

জামাইয়ের চাকরিটা থাকবে,

কোর্টের দেখছি যা'হাবভাব !!

পুরুত মশাই চিন্তায় আছেন,

এবার বিয়ের বাজার মন্দা!

হাইকোর্টের অর্ডার গুলো আসুক,

বিয়ের মরসুমের বাদ'টা !!

মুদির দোকানদার হিসেব কষছে,

কজন মাস্টারকে দিয়েছে ধার!

গাড়ির শোরুমে নোটিস ঝুলিয়েছে,

'বঙ্গের চাকুরে' লোনের থেকে বাদ !!

শশুর মশাই হিসেব কষছেন,

জামাইয়ের চাকরির বয়স কতো!

শাশুড়ি বলে শুধু দেখো জামাইয়ের,

চাকরি 'মমতার সরকারের' নয়তো !!

আগের জামাইরা বেচে যাবে,

তবে নুতন জামাইদের হবে কি!

জমি বেচে-বন্দক দিয়ে-লোন করে,

"পার্থর" থেতে চাকরি কিনেছি !!

খাটলো জামাই গতর দিয়ে,

এবার চাকরিটা যাওয়ার পালা!

তারসাথে আবার ফেরাতে হবে-

"বেতন" নয়তো জেলে ভাত খাওয়া !

হে বঙ্গরানী তুমি করলে কতনা কি,

সারদা-নারদা-সরকারি চাকরি!

সাথে টাটানেনো'কে ঝুলালে ফাঁস,

এবার তোমার হবেই সর্বনাশ !!

আমাদের ভদ্র হতে হবে

-শ্রুতিসৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়


গায়ে পরার মত কাপড় না জুটলেও

শব্দের গায়ে কাপড় পরানো চাই,

আমাদের ভদ্র হতে হবে।

আমাদের শালীনতা বজায় রাখতে হবে।

খেতে না পেলেও, খিদে পেয়েছে বলা চলবে না।

খিদেয় গা পাকিয়ে উঠুক, বেরিয়ে যাক নাড়ি ও ভুঁড়ি,

তবু আমাদের শব্দ যেন ন্যাংটো না হয়।

হ্যাঁ, প্রয়োজনে অনুস্বারের মাথায় দিতে হবে মাত্রা,

বর্ণনির্বিশেষে ঘোমটা পরিয়ে রাখতে হবে,

চন্দ্রবিন্দু লেখা পর্যন্ত।

আমাদের ভদ্র হতে হবে।

আমাদের সভ্য হতে হবে।

সভ্যসমাজে কেউ এমনি এমনি কাপড় খোলে না।

যাকে দেখে মনে হচ্ছে, উলঙ্গ, নির্লজ্জ,

কে জানে হয়তো সে জন-সমুদ্রের সৈকতে

স্বর্ণালী রৌদ্রস্নানে ব্যস্ত আছে!

তাকে 'ন্যাংটো' তো বলাই যায় না,

বড়জোর একটু ভালো শব্দ ব্যবহার করে বলতে পারেন,

উলঙ্গ।

কিন্তু তাহলেও ভদ্রতাবোধে,

বাতানুকূল কামরার যাত্রীদের মত,

খুব আস্তে করে বলতে হয়।

এখানে কেন্দ্রীয় বাতানুকূল‌ তন্ত্রে,

একটিও প্রতিকূল কথা বলবার জো নেই।

আমাদের ভদ্র হতে হবে।

আমাদের মৌন হতে হবে।

মনে রাখতে হবে, আমাদের বুদ্ধি উলঙ্গ করে,

তার কোমরে দড়ি পরিয়ে,

লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে,

দাস কেনাবেচার হাটে বেচে দেয়ার মধ্যে

কোনো অশ্লীলতা নেই।

শুধু আমাদের বিনয়ী হতে হবে।

আমাদের ভদ্র হতে হবে।

কারণ, ভদ্রলোক দুটো কথা শোনাতে পারে না।

তাদের তো একটাই কথা,

আমাদের ভদ্র হতে হবে।

আমাদের সহ্যশক্তি বাড়াতে হবে।

উপার্জনের সব রাস্তা এক এক করে বন্ধ হয়ে গেলেও,

আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে,

নিষ্পলকে তাকিয়ে থেকে দেখতে হবে বিক্রি হ‌ওয়া।

লোকাল ট্রেনে সামুদ্রিক মাছের মত,

একদিন শেষ প্যাসেঞ্জারটার‌ও কশেরুকা বেচা হয়ে যাবে।

আমাদের সহ্য করা শিখতে হবে।

কারণ আমাদের টিকে থাকতে হবে,

সূর্য যতক্ষণ না পৃথিবী গিলে খাচ্ছে,

ঠিক ততদিন পরিপূর্ণ মমি হয়ে।

আমাদের ভদ্র হতে হবে।





হুল দিবস

- সুমন বিশ্বাস


সিধু কানু চাদ ভৈরব শক্তি দিয়ো আজ।

লাচতে যাবক হুল দিবসে গুছিয়ে ঘরের কাজ।

মাথায় নিয়ে কলসী ঘটি রংবেরং-এর ফুল;

মাদল তালে লাচতে যেন হয়না মোদের ভুল।

এদিনটোতে বাপ ঠাকুরদারা ভগনাডিহিতে;

দাঁড়িয়ে ছিল তীর ধনুক আর বল্লম নিয়ে হাতে।

ভয় পেয়ে যায় কামান গোলাও যদি বাঁধা যায় জোট।

মারাংবুরুর শক্তিতে আজ আবার জেগে ওঠ।

জেগে উঠল সিংভুম আর সান্তাল পরগনা।

সেদিনটোকে ভুলতে যে মোরা পারবোক না।

মহাজন, জোতদার দিখু আর ইংরেজ;

সবাই সেদিন দেখে ছিল সাঁওতালদের তেজ।

কামান গোলায় প্রাণ দিয়েছি - দিইনি মোদের মান।

হারিয়ে গেছে সর্বস্ব - হারায়নি সম্মান।

শিখিয়েছিল সিধু কানু প্রতিবাদের ভাষা।

সেটাই মোদের বেঁচে থাকার একমাত্র আশা।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929