কিছুসময় আগে একজন বন্ধু জানতে চেয়েছিলেন, কলেজে ফর্ম ফিলাপের সময় এখনো Religion এর জায়গায় আমার অভিভাবকের ধর্ম (Religion) লিখতে হয়েছিল।
আমি একজন উকিল মারফৎ এফিডেফিড করার আবেদন করেছিলাম No Religion, No Cast এর জন্যে। কিন্তু সেই সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে। তাছাড়া, এখনো পর্যন্ত যে সমস্ত সরকারি কিংবা বে-সরকারি চাকরির ফর্ম বের হয় সেখানে কোথাও Humanity বা Humanism বলে আলাদা কিছুর উল্লেখই থাকেনা। আমার একজন বন্ধু এমনই একটি ফর্মে Humanism লেখায় সেটি বাতিল করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে আমাদের কি করণীয়?
উত্তর - আমি সন্তোষ শর্মা, উক্ত প্রশ্নগুলির উত্তর জানতে যোগাযোগ করেছিলাম,কয়েকজন বিশিষ্ট আইনজীবীর সাথে। ওনারা জানিয়েছেন- “ভারতীয় নাগরিকদের জন্যে সংবিধানের তৃতীয় অংশে ১২-৩৫ নং ধারায় ৬ টি মৌলিক অধিকার লিপিবদ্ধ রয়েছে যার একটি হলো ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার। সংবিধানের ২৫ নং ধারায় উল্লেখ রয়েছে, “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের বিবেক এবং বিশ্বাস অনুযায়ী যে কোন ধর্মমত গ্রহন, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও নিজধর্ম প্রচার করতে পারবেন।”
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তে বোম্বে হাইকোর্ট তাদের একটি রায়ে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন যে, রাষ্ট্র কাওকে তার ধর্ম জানাতে বাধ্য করতে পারবে না। তিনি কোনও ধর্মের অন্তর্ভুক্ত নন বা কোনও ধর্ম পালন করেন না এই দাবী করার সাংবিধানিক অধিকার আছে প্রত্যেক নাগরিকের। অন্যদিকে, এপ্রিল ২০২১ সালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বি আর গাভাই এবং ঋষিকেশ রায়কে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কোনো ভারতীয় নাগরিক তার ইচ্ছামতো ধর্ম গ্রহণ করতে পারবেন কারন সংবিধানে এই অধিকার দেওয়া হয়েছে।”
তাই জন্মসূত্রে পাওয়া Religion চিহ্ন ছেড়ে যেকেউ নোটারী পাবলিক ও ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা এফিডেফিট করিয়ে No Religion বা HUMANISM সার্টিফিকেট বানাতে পারেন। তামিলনাড়ুর বাসিন্দা স্নেহা পার্থিবরাজ ভারতের প্রথম সেই মহিলা যিনি এমন সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন। তাছাড়া ২০১৯ সালে হরিয়ানার বাসিন্দা রবি কুমার, No Casts, No, Religion, No God সার্টিফিকেট পেয়েছে যাতে সরকারি সীলমোহরও রয়েছে। কোনো নাগরিক সরকারি অথবা বে-সরকারি কোনোরকম ফর্মের Religion কলামে HUMANISM, ATHEISM অথবা No Religion ইত্যাদি লিখলে সেই ফর্ম বাতিল করা বে-আইনি। প্রয়োজনে আবেদনকারী এই সংক্রান্ত ব্যপারে আদালতের দারস্থও হতে পারেন নির্দিধায়।