'মেয়েলি' আলতা!

রাজা দেবরায়


Nov. 18, 2024 | | views :973 | like:2 | share: 2 | comments :0

মাঃ আয় সোনা মা আমার, পায়ে আলতা লাগিয়ে দিচ্ছি।


মেয়েঃ পায়ে আলতা লাগালে কী হবে মা?


মাঃ বলিস কী! আলতা লাগানো কত ভালো জানিস। আর কী সুন্দরও লাগে দেখতে। দ্যাখ্ দ্যাখ্ আমার পা দুটো কী সুন্দর লাগছে।


মেয়েঃ বেশ বুঝতে পারছি মা! আমাকে মেয়ে দেখাতে লাগবে সেটা পরিষ্কারভাবে বলো! তাই নয় কি? শুধু শুধু কেনো আলতার বাহানা দিচ্ছো!!?


সংবাদপত্রে প্রকাশিত কয়েকটি খবর

 ১. কুসংস্কার বিরোধী আইনের দাবি এবার এ রাজ্যেও

মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকের পথ অনুসরণ করে এরাজ্যেও একই ধরনের আইন আনার দাবি তুলছেন বিজ্ঞানকর্মীরা। খুব শীঘ্রই একটা বাস্তবসম্মত প্রস্তাব তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করবে।

 কুসংস্কার বিরোধী আইন চালু করার দাবিতে পথে নামলেন এ রাজ্যের মানুষ। মহারাষ্ট্রে এই আইন ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। কুসংস্কার বিরোধী আইনের দাবি উঠেছে কেরল ও কর্নাটকেও। পশ্চিমবঙ্গও কিন্তু পিছিয়ে নেই। এবারের কলকাতা বইমেলায় 'কুসংস্কার, তন্ত্রমন্ত্র ও জ্যোতিষ বিরোধী আইন'-এর দাবি জানিয়ে মেলা পরিক্রমা করতে দেখা গিয়েছে শ’খানেক মানুষকে।

'কুসংস্কারবিরোধী আইন প্রস্তাবনা উদ্যোগ'-এর তরফে বিজ্ঞানকর্মী সুরেশ কুণ্ডু জানিয়েছেন, ''কুসংস্কারবিরোধী আইন লাগু করার ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছে মহারাষ্ট্রের ''অন্ধ শ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি''। আমরা তাদের অনুসরণেই এ রাজ্যেও একই ধরনের আইন আনার দাবি তুলেছি। লিফলেট, পোস্টার ও গণস্বাক্ষর দিয়ে প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই একটা বাস্তবসম্মত প্রস্তাব আমরা পেশ করব রাজ্য সরকারের কাছে। ওই প্রস্তাবে কুসংস্কারবিরোধী বিলের সম্ভাব্য রূপরেখা দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের বাস্তব পরিস্থিতি ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে মনে রেখেই এই আইনি খসড়া প্রস্তাবটি তৈরি করা হচ্ছে।''

উদ্যোগের পক্ষে সাধন বিশ্বাস বললেন, ''কুসংস্কারের সুযোগ নিয়ে গুরুজি, বাবাজি, মাতাজি, পীর, ফকির, ফাদার'রা প্রতারণার ফাঁদ পেতে রেখেছে। তন্ত্রমন্ত্র তুকতাক তাগা তাবিজ জ্যোতিষ ইত্যাদি দিয়ে নানাভাবে ঠকানো হয় জনসাধারণকে। এমনকী তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করা হয়। কুসংস্কারবিরোধী আইন চালু করতে পারলে ধর্ম ও কুসংস্কারের নামে আর্থিক প্রতারণা, শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহ, সামাজিক মর্যাদাহানি ইত্যাদি বন্ধ করা যাবে।''

তবে কুসংস্কার বিরোধী উদ্যোগের অন্যতম নেতা অরিন্দম মুন্সীর বক্তব্য, ''কুসংস্কার বিরোধী আইন চালু করলেই যে তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে লোক ঠকানো, ভূত ছাড়ানোর নামে ঠ্যাঙানো ও নোংরা খাওয়ানো কিংবা যৌন হয়রানি বন্ধ হয়ে যাবে, এমন নয়। আইন একটা অস্ত্র যা হাতে থাকলে, এই ধরনের ঘটনা ঘটলে, আমরা পুলিশ-প্রশাসন'কে চাপ দিতে পারব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু কুসংস্কারজনিত শোষণ ও পীড়ন পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে গোটা ব্যবস্থা'কেই পালটাতে হবে।''


২. ভূত ভর করেছে ছাত্রীর উপর! আতঙ্ক এলাকায়, আজও কুসংস্কারে ডুবে।

কবর থেকে উঠে আসা ভূত নাকি চেপেছে বছর আটেকের বালিকার ঘাড়ে। তা নিয়েই পড়ে গেল হুলুস্থূল। এলাকাবাসীর দাবি ভূতে ধরেছে বলেই, ছাত্রী এমন অস্বাভাবিক আচরণ করছে। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী চিৎকার-চেঁচামিচি করছে, কখনও মায়ের গলা টিপতে যাচ্ছে। এই ঘটনায় ভূতের আতঙ্ক তো ছড়িয়েছেই, তার থেকেও লজ্জার এ ঘটনা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের। প্রতীকী ছবি চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের বড় চৌধুরী পাড়ায়। হঠাৎ ওই বালিকার অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সবাই-ই বলতে শুরু করে ওকে ভূত ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গে নানা দাওয়াই শুরু হয়ে যায়। কেউ সুপারি গাছের পাতা হাতে দলে ওই বালিকার নাকে দেয়, কেউ কানে দেয় সরষের তেল। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

এরপরই আবির্ভূত হন মৌলবি। তিনি এবার শুরু করেন ঝাড়ফুঁক। চলতে থাকে তুকতাকও। ভূতের সঙ্গে কথোপকোথনও চলতে থাকে তাঁর। জানা যায়, কবরে ভূত খুব কষ্টে আছে। তাই সেই ভূত এসে ভর করেছে ছাত্রীর উপর। এই ঘটনায় প্রকট হয়ে পড়ে এখনও সামাজিক কুসংস্কারের শিকড় কতখানি গভীরে রয়েছে।

সম্প্রতি এক তরুণী আত্মঘাতী হন এলাকায়। তাঁকে কবর দেওয়া হয় পাড়াতেই। তার অতৃপ্ত আত্মাই ছাত্রীকে ভর করেছে। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। ভূতের আতঙ্ক কাটাতে তাই সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করছে জেলা প্রশাসন। মেডিকেল টিম পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।

লিংক- https://bengali.oneindia.com/news/west-bengal/ghost-panic-is-spread-jalpaiguri-a-girl-student-is-behaved-unnatural-044699.html

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929