ভর। মানসিক রোগ, নাকি ভড়ং?

অভিষেক দে


Nov. 18, 2024 | | views :486 | like:0 | share: 0 | comments :0

১৩ জুন ২০০২, স্থান : বীরভূম জেলার নলহাটি। একজন চল্লিশোর্ধ মহিলা আচমকাই উন্মত্তের মতন আচরণ করেছিলেন। হাতের কাছে যা পাচ্ছেন তাই ছুঁড়ে দিচ্ছেন। উপস্থিত জনতার সামনে কখনও নাকিসুরে কাঁদছিলেন তো কখনওবা পুরুষ কন্ঠের ন্যায় আবোলতাবোল বকেছিলেন। বিশ্বাসীদের দাবী এই মহিলাকে ভূতে বা জ্বীনে পেয়েছে বা ধরেছে।  অপরপক্ষের দাবী ইনি  মানসিক রোগী নয়তো শুধুই অভিনয় করছেন অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। শোনা গেছে এর পরে একজন ওঝা এসে নিজের কেরামতি দেখানোর পরেও সমস্যা না মেটায় মহিলার দূর সম্পর্কের একজন আত্মীয় ওনাকে কলকাতার পাভলব মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান এবং ওখানেই উনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। 

এই ধরনের ঘটনা, হয়তো অনেকেই দেখেছেন নিজের জীবনে। দেখেছেন এর চেয়েও বেশি কিছু। যেমন ধরুন, কোনো ভূতে(!) ধরা কিংবা ভূতের ভরে পরা মহিলার উন্মত্ত আচরণ,জ্বলন্ত কয়লাকে হাতে তুলে নেওয়া, জলভর্তি কলসি দাঁতে তুলে লাফ দেওয়া ইত্যাদি বেশ কিছু। যেহেতু সেইসব অদ্ভুতুড়ে ঘটনা দেখে আপনার মনে হয়েছে এর ব্যাখ্যা আপনার কাছে নেই তাই নিশ্চই এটা অলৌকিক কিংবা ভূতুড়ে ব্যাপার স্যাপার। অথচ প্রতিটি ঘটনার পেছনেই থাকে একটা কার্যকারন সম্পর্ক। কারন। এই পৃথিবীতে "অলৌকিক “নামক কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই। সমস্ত তথাকথিত অলৌকিক, অদ্ভুতুড়ে ঘটনার পেছনে রয়েছে একটা “লৌকিক “বা বিজ্ঞানসম্মত কারণ। এই লৌকিক কারণ টাই অনেকের জানা না থাকায় বিষয় গুলো ভৌতিক, অলৌকিক ইত্যাদি ঠেকে। তাছাড়া এটাও সত্যি, অনেকেই অলৌকিক কিছুতে প্রবল ভাবে বিশ্বাসী, সেই কারণে তাঁরা সবতেই দেবত্ব,অলৌকিক, ভৌতিক ইত্যাদির ধরে নেন। 

মনোবিজ্ঞান মতে এইসব ভূতের (!) ভরে পরা মহিলারা একপ্রকার মানসিক রোগ (Neurotic Disorder) এ আক্রান্ত। মনোবিজ্ঞান এমন ঘটনাকে প্রধানত তিনটে ভাগে ভাগ করেছে। যেমন - 

(১) Hysteria (হিস্টিরিয়া)। এরও আবার দুটিভাগ আছে। Dissociative Hysteria এবং Convertion Hysteria.

(২) Maniac Depressive (ম্যানিয়াক ডিপ্রেসিভ)।

(৩) Schizophrenia (সিজোফ্রেনিয়া বা স্কিটসোফ্রেনিয়া)।

 হিস্টিরিয়া  কথাটির উৎপত্তি গ্রীকশব্দ 'Hysteron  থেকে, যার অর্থ জরায়ু। প্রাচীনকালে গ্রীসদেশের মানুষের ধারণা ছিলো জরায়ু খেপে গেলে হিস্টিরিয়া হয়। অথচ এই ধারনাটাই মিথ্যে। যেহেতু মহিলারাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন, তাই মনে করা হত যে জরায়ুর গোলমালের কারণেই এই রোগের সৃষ্টি। পরে প্রমাণিত হয়েছে, পুরুষেরাও এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নন। 

সাধারণত দুর্বল মস্তিষ্কের ব্যাক্তিরা অর্থাৎ যাদের মস্তিষ্কের গতিময়তা কম, অল্পেতেই ভেঙ্গে পড়েন, আবেগপ্রবণ, অন্ধবিশ্বাসী, কুসংস্কারাচ্ছন্ন শিক্ষার সূযোগ সেভাবে না পাওয়া ব্যাক্তিরাই ভূতের (!) ভরে আক্রান্ত হন।

জল ভরা কলসি দাঁতে করে তোলা, লজ্জা ভুলে প্রচণ্ড লাফ দেওয়া কিংবা কোনও গাছের শক্ত ডাল ভেঙ্গে ফেলা হিস্টিরিয়া রোগীর পক্ষে অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণভাবে এই ধরনের মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের সহনশীলতা কম তারা একনাগাড়ে একই কথা শুনলে মস্তিষ্কের কিছু কোষ বারবার উত্তেজিত হয়ে থাকে। ফলে এর পরে অনেক সময় উত্তেজিত কোষগুলি অকেজো হয়ে পড়ে অন্য কোষের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। মস্তিষ্কের কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটে। এই রোগে আক্রান্তরা গভীর ভাবে বিশ্বাস করেন তাঁদেরকে কোনো ভূতে বা জ্বীনে ধরেছে কিংবা ভর করেছে। আপাতদৃষ্টি তে এইধরনের অদ্ভুত আচরণ যতই অস্বাভাবিক লাগুক না কেন, আক্রান্ত ব্যাক্তিরা কিছুসময়ের জন্য নিজেকে হারিয়ে শরীরের চুড়ান্ত সহ্য শক্তিকে ব্যাবহার করেন, যেটা স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের পক্ষে অসাধ্য বা অসম্ভব। আসলে হিস্টিরিয়া, ম্যানিয়াক ডিপ্রেসিভ, স্কিটসোফ্রেনিয়া ইত্যাদি রোগীদের রোগ সম্বন্ধে আমজনতার ভালো ভাবে জানা না থাকায় রোগীদের কাজকর্ম এবং নানান আচরণ আমজনতার কাছে ভূতুড়ে কাণ্ডকারখানা হিসেবেই গ্রহণযোগ্যতা পায়।

গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস (খ্রীষ্টপূর্ব ৪৬০- ৩৭৭) ই প্রথম বলেন, মানসিক রোগ আর পাঁচটা রোগের মতই একটা রোগ। এর সঙ্গে ভূত বা অশুভ শক্তির কোনও সম্পর্ক নেই। মস্তিষ্কের বিকারের ফলেই নানান মানসিক রোগ সৃষ্টি হয়। প্রাচীনকালে এইধরনের ভরে পরা মানুষের সাথে চরম অমানবিক অত্যাচার করা হত। যার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ১৪৮৬ সালে খ্রীষ্টান ধর্মের পোপের নির্দেশ মত একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় “The Witche's Hammer "..গ্রন্থটিতে মানসিক রোগীদের 'ডাইনি ' ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই আজও কোনো মহিলাকে ডাইনি বা ডায়েন চিহ্নিত করে অত্যাচারের ঘটনা প্রায়শই খবরের কাগজে স্থান পায়। এই প্রসঙ্গে একটা তথ্য জানানো উচিৎ হবে বলে মনে করি।

রাঁচির মান্দার ব্লকের কাঞ্জিয়া মারাইটোলি গ্রাম। এই গ্রামেই গত ৭ই অগাস্ট, ২০১৫ তে পাঁচ মহিলা কে পিটিয়ে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে একদল উন্মত্ত গ্রামবাসী (তথ্যসূত্র : ABP, 23rd August 2015)। 

সেই পাঁচ জন মহিলার অপরাধ, তারা নাকি “ডাইনি"। এখানে কেউ ডাইনি নিয়ে সন্দেহ করেনা, একদম গভীর বিশ্বাস করে। 

২০১৪ সালে এই মারাইটোলি গ্রামের পাশেই একজন মহিলকে ডাইনি ঘোষণা করে হত্যা করার পরে গ্রামের ওঝার নিদান মত সাইকেলের হ্যান্ডেলে উক্ত মহিলার কাটা মাথা নিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। পুলিশ প্রশাসন কে সম্পুর্ন উপেক্ষা করেই। 

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৫ র অগাস্ট পর্যন্ত ডাইনি সন্দেহে কিংবা বিশ্বাসে ১২৪ জন মহিলা দের নির্মম ভাবে হত্যা হয়েছে।

ফিরি "ভর”নিয়ে। শুধুমাত্র কাল্পনিক অপদেবতা, ভূতপ্রেত, জ্বীন, আত্মা ইত্যাদিরই ভর নয়, কাল্পনিক ঈশ্বরের ভরের ঘটনাও প্রায়শই শোনা যায়। মূলত, কালী, দুর্গা, মহাদেব, শীতলা, ওলাবিবি, পাঁচুবাবা, পীর, বনবিবি, সন্তোষী, মনসা, সাঁঝলি মাঈ ইত্যদিদেরই ভরের ঘটনা শোনা যায়। এর ব্যাখ্যাও একই। কখনও মানসিক রোগ আবার কখনওবা শুধুই অভিনয়, ভর এদের কাছে ভড়ং, শুধু কিছু কামানোর চেষ্টায়। 

যুক্তিবাদী, বিজ্ঞান আন্দোলন কর্মীরা এমন কয়েকশো ভরের ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করে দেখে স্পষ্ট বুঝেছেন শতকরা ৯০% ক্ষেত্রে এই ভর শুধুই ভড়ং। বাকিদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন  মানসিক রোগ থেকেই এই ভরের সৃষ্টি। মনোরোগ চিকিৎসক দের দাবী আমাদের পাঁচটি ইন্দ্রিয়, যেমন - চোখ, কান,নাক,জিভ, ত্বক ইত্যাদি আমাদের অনেক সময় প্রতারিত করে। মনে করুন মরুভূমির কথা, প্রখর রোদে উত্তপ্ত বালি কে দেখে অনেকেই জল ভেবে ছুটে যান, যাকে আমরা মরিচিকা বলি। আবার নাম সংকীর্তন  আসরে অনেকেই ভাবাবেগে ডুবে গিয়ে চেতনা হারিয়ে অদ্ভুত আচরণ করে বসেন। কেউ আবার অলীক কিছু দেখার, শোনার দাবী করেন। এর কারণ হচ্ছে- 

(১)  Illusion (ভ্রান্ত অনুভূতি), এরও পাঁচটি ভাগ আছে যেমন, Optical Illusion/Visual Illusion (দর্শানুভূতির ভ্রম), (খ) Auditory Illusion (শ্রবণাভূতির ভ্রম), Talctile Illusion(স্পর্শানুভূতির ভ্রম), Olfactory Illusion (ঘ্রাণানুভূতির ভ্রম) এবং Taste Illusion (জিহ্বানুভূতির ভ্রম)।

(২) Hallucination(অলীক বিশ্বাস) (৩) Paranoia (বদ্ধমূল ভ্রান্তিজনিত মস্তিষ্ক বিকৃতি) (৪) Delusion (মোহ / অন্ধ ভ্রান্ত ধারণা)।

একুশ শতকে বিজ্ঞানের গতি দুর্বার। এই মহাবিশ্বের অনেক অজানা রহস্যের সমাধান বিজ্ঞান করে ফেলেছে। আগামীদিনে আরও অনেক রহস্যভেদ হবে। তবে এটাও সত্যি বিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত মানব মস্তিষ্কের অনেক অদ্ভুত কার্যকলাপের রহস্যভেদ করে উঠতে সেভাবে পারেনি। তবে নিরন্তর গবেষণা চলছে পৃথিবীজুড়ে। আগামীদিনে সেই সব রহস্যেরও সমাধান হয়ে যাবে দ্রুত। 

এতটা লেখার মাধ্যমে আশাকরি এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, যাকে আমজনতা ভূতে বা জ্বীনে কিংবা ঈশ্বরের ভর বলে মনে করেন সেটা আসলেই একপ্রকার মনের বিকার কিংবা মানসিক রোগের ই কারণ। আবার কখনও দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকজন প্রতারক ভরের ভড়ংবাজী করেন টু পাইস রোজগারের ধান্দায়। 

ভর নিয়ে কিছু লিখতে গেলে দুটো প্রশ্ন উঠে আসা স্বাভাবিক। যেমন, ভরে পরা অনেকেই আশীর্বাদী ফুল, জলপড়া, তেলপড়া দেন, তাতে সুস্থও হয়ে ওঠেন অনেকে। ভর যদি মানসিক রোগ কিংবা প্রতারণাই হবে তাহলে এটা কিভাবে সম্ভব?

 এর উত্তরটা খুবই সোজা। এর জন্য সবার আগে জানতে হবে ' প্ল্যাসিবো ' কাকে বলে। প্ল্যাসিবো তে শুধু সেই সব রোগই সেরে উঠবে যা মানসিক কারণে সৃষ্টি (Psyscho Somatic Disorder)। নয়তো কোনো ভরে পড়া ব্যাক্তির ক্ষমতা নেই  ক্যান্সার টু এইডস রোগী কে সুস্থ করে তোলে। আসুন জেনে নিই' প্ল্যাসিবো ' আসলে কি বা কাকে বলে। 

আসলে, মানবদেহে যত প্রকার রোগ ব্যাধি হয়, তার একটা বড় অংশই কিন্তু মানসিক কারণে সৃষ্ট। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলে এটাই সত্যি। বুক ধড়ফড়, উচ্চ বা নিম্ন ব্লাডপ্রেশার, উচ্চ বা নিম্ন ব্লাডসুগার, হাঁপানি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরের নানান স্থানে ব্যাথা, পুরুষত্বহীনতা, কামশীতলতা, পেটের গোলমাল, ক্লান্তি, অবসাদ, পেটে আলসার, গ্যাসট্রিকের অসুখ, কাশি, মহিলাদের ঋতুস্রাব-জনিত সমস্যা, বাত, শরীরের কোনো অংশের অবশতা ইত্যাদি অসুখ শারীরিক কারণ ছাড়াও মানসিক কারণেও হয়। অর্থাৎ, মানসিক প্রতিক্রিয়া বা মনের অত্যাল্প অসুস্থতা বা সাময়িক বিকৃতি মন ছেড়ে শরীরের আশ্রয় নেয় রোগীর অজান্তে। যদিও এভাবে মানসিক রোগ হওয়া বা বৃদ্ধি হওয়া আটকে যায়; এটাকে মনের "স্কেপগোট”বলে। কিন্তু শারীরিক অসুবিধা উপলব্ধ হয়; অথচ শারীরিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না মেডিকেল পরীক্ষায়। এসব রোগকেই "দেহ-মন-জনিত বিশৃঙ্খলা”বা "Psycho-Somatic Disorder”বলে। জলপড়া, তেলপড়া, চরণামৃত, স্পর্শ চিকিৎসা, ঔষধ-গুণহীন ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট অথবা ইঞ্জেকশন ইত্যাদির প্রয়োগ করে অনেক সময় এই Psycho-Somatic Disorder-এর রোগীদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এই ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতিকে বলে 'প্ল্যাসিবো' (Placebo)। যার অর্থ করলে দাঁড়ায় 'আমি খুশি করবো কিংবা আমি সেরে উঠবো'। ইংরাজিতে একে বলা চলে ' I Will Please '। এখানে রোগীর বিশ্বাসবোধ-এর গুরুত্ব অপরিসীম। 

কোনো Psycho Somatic Disorder-এর রোগী যদি জলপড়া, তেলপড়া, ঝাঁড়ফুক, স্পর্শ চিকিৎসা বা রেইকি, চরণামৃত, হোমিওপ্যাথি  ইত্যাদিতে গভীরভাবে আস্থা রাখে, তাহলে জলপড়া ইত্যাদি যা আগেই লিখেছি তাতে সুস্থ হতে পারবে অবশ্যই। এই সুস্থ হয়ে ওঠার পেছনে উক্ত জিনিসগুলোর কোনো ভূমিকাই নেই। একেবারেই শূন্য। এখানে রোগীর গভীর বিশ্বাসই একমাত্র Factor  বা গুণ। 

ইতিমধ্যে লেখাটা বেশ লম্বাচওড়া হয়েছে। পাঠক বন্ধুদের ধৈর্য্যচ্যুতি হতে পারে, তাই আপাতত এখানেই ইতি টানতে বাধ্য হলাম। মনোরোগ চিকিৎসক বা মনোবিজ্ঞানীদের মতে ভূতে ভর কিংবা ঈশ্বরের ভর ঠিক কি এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই পড়ুন-

১- Modern Synopsis of Comprehensive Text Book of Psychiatrist, by-  Harold I.kaplon & Benjamin Sadock,3rd edition, Williams & Williams - London.

 ২- দেজ পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত, প্রবীর ঘোষ এর লেখা অলৌকিক নয়, লৌকিক ২ য় খন্ড, মনের নিয়ন্ত্রণ যোগ মেডিটেশন এবং আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা।

৩- অলৌকিক চিকিৎসায় কি রোগ সারে? রাজেশ দত্ত, র‍্যাডিক্যাল। 

৪)মনের বিকার ও প্রতিকার- ড: ধীরেন্দ্র নাথ  নন্দী - আনন্দ পাবলিশার্স।

পরিশেষে এই লেখকের বিনীত অনুরোধ, কোনো অন্ধবিশ্বাসে বশ হওয়া নয়। নিজের যুক্তি-বুদ্ধির প্রয়োগ করুন, যেটা সত্য সেটাকেই গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন মানসিক রোগী মানেই কিন্তু সেই ব্যাক্তি উন্মাদ কিংবা পাগল নয়। সঠিক সময়ে সু-চিকিৎসা পেলে তাঁরা অবশ্যই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।আপনার আশেপাশে এমন কোনো ভারগ্রস্ত ব্যাক্তি কে দেখলে ভক্তি ছেড়ে যুক্তিতে মন দিন। ওঝা,গুনিন ইত্যদিদের বাড়ি যাবেন না, তথাকথিত ভূত বিশেষজ্ঞদেরও ডাকবেন না। রোগ লুকিয়ে না রেখে, রোগী কে অবদমিত করে না রেখে দ্রুত একজন ভালো মনোরোগ চিকিৎসক এর  

পরামর্শ নিন। কোনো অলৌকিক ঘটনার ব্যাখ্যা চাইলে অবশ্যই জানান। সাধ্যমতো চেষ্টা করবো সমাধানের নয়তো ভাণ্ডাফোঁড় করার। The Drugs And Magic Remedies (Objectionable Advertisement ) Act 1954 অনুযায়ী কোনো ওঝা, জানগুরু, গুনিন, সৎসখা, দিখলি, অলৌকিক রোগের চিকিৎসক (!) ইত্যাদিরা মন্ত্র-তন্ত্র, তাবিজ-কবজ, জলপড়া, তেলপড়া ইত্যাদির দ্বারা রোগ মুক্ত করার দাবী জানালে কিংবা কাউকে ডাইনি ঘোষণা করে শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার করলে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে কড়া শাস্তির ব্যাবস্থা। জেল এবং জরিমানা দুটোই। 

মনে রাখবেন, এইসব ভূত, প্রেতাত্মা, অশরীরী, জ্বীন ইত্যাদি থাকে গল্পগাঁথায়, পত্রিকার পাতায় এবং আমাদের মনের অন্ধকার জগতে, সেখানে জ্ঞানের আলো জ্বলালেই তেনারা ভ্যানিশ। 

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929