ধর্ম কথাটার মানে হল ধারন করা। যে যা স্বভাব বা বৈশিষ্ট্য ধারন করে সেটাই তার ধর্ম। যেমন জলের একটি ধর্ম, আধারের আকার ধারন।
মানুষের ধর্ম তাই-ই যা মানুষ ধারন করে থাকে। এক্ষেত্রে ঔচিত্যবোধের প্রশ্নটি জড়িত। আপনি যে স্বভাব বা বৈশিষ্ট্য ধারন করে আছেন, সেটাই আপনার ধর্ম।
মানুষের শারীরিক গঠন তার ধর্ম। যেমন তার মস্তিস্ক, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, গায়ের রঙ ইত্যাদি। আবার তার স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যও তার ধর্ম। এই স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যের সাথে ঔচিত্যবোধের প্রশ্নটি জড়িত। যেমন চুরি করা চোরের ধর্ম, কিন্তু তা উচিৎ নয়। তাই এই ধর্ম গ্রহনযোগ্য নয়। আবার বিপদে আপদে মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এটা গ্রহণযোগ্য।
অর্থাৎ যে শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষ ধারন করে থাকে সেগুলিই তার ধর্ম। মানুষের মানসিক বৈশিষ্ট্য, যা তার ও অন্যন্য জীবের পক্ষে মঙ্গলজনক তাকেই মানবধর্ম বলা যায়।
মানুষের সততা, ভালবাসা, মুল্যবোধ, জ্ঞানপিপাপা ইত্যাদি হল তার ধর্ম। এটাই মানবধর্ম। মানুষ হিংস্র জন্তকেও রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে অবিরত, এটা মানবধর্ম। অপরদিকে মানুষের প্রতি মানুষের ঘৃণা, বিদ্বেষ, হিংসা ইত্যাদি মানবধর্ম নয়। আপনি যে ধর্মাবলম্বীই হোন না কেন, আপনি মানুষ। তাই মানবধর্ম আপনাকে মেনে চলতেই হবে। আপনি চান বা না চান। মানবধর্ম বিরোধী হলে আপনি দয়া মায়া, সততা, প্রেম সহ সকল সদ আচরণ এর বিরোধী। কারণ এগুলোই মানুষের ধর্ম। মানুষের ধর্মই মানবধর্ম।
কোনো মানুষ যদি মানবধর্মে বিশ্বাসের কথা বলে অসদাচরণ করে, তা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তার অসদাচরণ দেখে মানবধর্ম ভ্রান্ত হয়ে যায় না। তাই আপনার বিচারবুদ্ধি দিয়ে ভেবে দেখুন, মানুষের কী করা উচিৎ। তাই করুন। এটাই আপনার কর্তব্য।
জাতি ও বর্ণগত বিদ্বেষ, অর্থনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা, হিংসা, কলহ, অসততা, দ্বিচারিতা, স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিকতা সহ সকল অসদাচরণ মানবধর্ম বিরোধী। এগুলি পরিত্যাগ করুন। এগুলি মানুষের ধর্ম নয়।