বিজ্ঞানীরা কি জ্বিন বা শয়তানের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পেরেছে?

প্রিন্স ফার্দিনান্দ


Nov. 25, 2024 | | views :280 | like:0 | share: 0 | comments :0

(পর্ব-১)

উত্তর: এই প্রশ্নটা প্রায়ই মুমিনদের কাছ থেকে শোনা যায়। আমি নিজেও অফলাইনে বহু মুমিনের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক করেছি যাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী। তাই এই প্রশ্নটার একটা বিশ্নেষনমূলক উত্তর লেখার তাগিদ অনুভব করছি। এই লেখাটাতে আমি বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব ও সূত্রসমূহের আলোকে জিনের অস্তিত্ব/অনস্তিত্বের ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করবো। লেখাটাকে দুটি অংশে ভাগ করে সাজানো হয়েছে। প্রথম অংশে আমরা কোরান, হাদিস ও তাফসিরসমূহের আলোকে জিনদের পরিচয়, দৈহিক গঠন,খাদ্যাভ্যাস ও বাসস্থান সম্পর্কে জানবো এবং দ্বিতীয় অংশে জিনদের অস্তিত্ব অনস্তিত্বের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করবো । তাহলে চলুন শুরু করা যাক -

প্রথম অংশঃ    

১) জিনদের পরিচয় ও সৃষ্টির ইতিহাসঃ 

কোরান, হাদিস ও তাফসির গ্রন্থসমূহ অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে (আদমকে) সৃষ্টি করার আগে জ্বিন নামক একটা জাতিকে সৃষ্টি করেছিলেন যারা আগুনের তৈরি। আদমকে সৃষ্টির বহু আগে তারা পৃথিবীতে বসবাস করতো এবং আল্লাহর ইবাদাত করতো। একসময় তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং রক্তপাত ঘটায়। তখন আল্লাহ ফেরেশতাদের একটি বাহিনী  তাদের নিকট প্রেরণ করে। তারা সেই জিনদের কতককে হত্যা করে এবং কতককে পৃথিবী থেকে তাড়িয়ে বিভিন্ন দ্বীপে নির্বাসন দেয় কিন্তু জিনদের প্রধান নেতা ইবলিশকে কয়েকজন ফেরেশতারা বন্দী করে আকাশে নিয়ে যায়। সেখানে সে আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী করতে করতে  নিজেকে এতই উচ্চস্তরে নিয়ে যায় যে, চারডানা বিশিষ্ট ফেরেশতাদের মধ্যে অধ্যবসায়, জ্ঞান , মর্যাদা ও সম্মানের দিক থেকে সে সকলের সেরা হয়ে ওঠে । তাকে জান্নাতসমূহের (স্বর্গ) রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিম্ন আকাশ ও পৃথিবীর উপর কর্তৃত্ব দেওয়া হয়। অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী  সবকিছু সে নিয়ন্ত্রণ করতো। 

তারপর আল্লাহ যখন পৃথিবীতে আদমকে সৃষ্টি করার সংকল্প করলেন এবং মাটি দ্বারা তার দেহাবয়ব তৈরি করলেন তখন জিনদের প্রধান এবং তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদতকারী আযাযীল বা ইবলিশ তার চারদিকে ঘুরতে শুরু করে। যখন সে দেখতে পেল যে এটি একটি শূন্যগর্ভ, মূর্তি তখন সে আঁচ করতে পারলো যে, এটি এমন একটি দেহাবয়ব যার আত্মসংযম থাকবে না। তখন সে বললো যদি তোমার উপর আমাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাকে ধ্বংস করবো। আর যদি আমার উপর তোমার ক্ষমতা দেওয়া হয় তাহলে আমি অবশ্যই তোমার অবাধ্যতা করবো। 

তারপর যখন আল্লাহ আদমের মধ্যে তাঁর রুহের (প্রাণ বা আত্মা) সঞ্চার করলেন এবং তাকে সিজদাহ্ করার জন্য ফেরেশতাগনকে আদেশ দিলেন, তখন প্রবল হিংসাবশে ইবলিশ তাঁকে সিজদাহ্ করা থেকে বিরত থাকে এবং বলে, আমি তার চাইতে উত্তম। আমাকে তুমি আগুন থেকে সৃষ্টি করেছ আর তাকে সৃষ্টি করেছ কাদামাটি থেকে। এভাবে ইবলিশ আল্লাহর আদেশ অমান্য করে তার প্রতিপালকের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলে। সে ভুল যুক্তি প্রদর্শন করে তার প্রতিপালকের (আল্লাহর) রহমত থেকে দূরে সরে যায় এবং তার সমস্ত মর্যাদা যা সে ইবাদত বন্দেগী করে অর্জন করেছিল, তা থেকে বিচ্যুত হয়। 

অবশেষে ইবলিশকে উর্ধ্বজগত থেকে নামিয়ে দেয়া হয় এবং সেখানে কোনরকম বাস করতে পারে এতটুকু স্থানও তার জন্য হারাম করে দেয়া হয়। 

অগত্যা সে অপদস্ত লাঞ্চিত ধিকৃত ও বিতাড়িত অবস্থায় পৃথিবীতে নেমে আসে এবং তার অনুসারী অন্যান্য জিনদেরকে (যাদেরকে শয়তান বলা হয়) নিয়ে আদম সন্তানদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য সকল পথে ও ঘাঁটিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার পূর্বে ইবলিশের নাম ছিল আযাযীল। আযাযীল ফেরেশতাদের মতই ছিলো বটে। তবে সে ফেরেশতা জাতিভুক্ত ছিল না। কারণ সে হল আগুনের সৃষ্টি আর ফেরেশতারা নূরের (আলোর) তৈরী।

২) জিনদের অাকৃতি ও গঠনঃ

কোরান এবং হাদিস অনুসারে, 

জিনদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে নির্ধুম (ধোঁয়া বিহীন) অগ্নিশিখা হতে। তারা মানুষের আকার ধারণ করতে পারে এবং মানুষের মত কথা বলতে পারে ও শুনতে পারে। এরা মানুষ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীর আকার ধারণ করতে পারে বলে হাদীসে বলা হয়েছে। 

৩) জিনদের খাদ্যাভ্যাস ও বাসস্থানঃ

জিনরা আদম সন্তানদের মতই পানাহার, বংশবিস্তার ও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করে থাকে।  

আল্লাহর নামে জবাইকৃত পশুর হাড়-হাড্ডিই হলো জিনদের খাবার। এছাড়াও মানুষের ফেলে উচ্ছিষ্ট, শুকনো হাড়, গোবর এসমস্তই জিনদের খাবার। 

জিনরা সাধারণত মানুষের বসবাসের স্থানে থাকে না। তারা মানুষের পরিত্যক্ত স্থানে থাকতে পছন্দ করে। তাদের অধিকাংশই মানুষের কাছ থেকে দুরে নির্জন এলাকায় বসবাস করে। তবে কিছু প্রজাতির জ্বীন মানুষের সাথে লোকালয়ে থাকে । এক হাদিস থেকে জানা যায়, জ্বীনেরা নোংরা ও গন্ধময় জায়গায় থাকতে পছন্দ করে, যেখানে মানুষরা ময়লা এবং খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে রাখে। পায়খানা এবং প্রস্রাব করার জায়গাগুলোতে জ্বীনদের অবাধ বিচরণ। 


(২)

এই অংশে আমরা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের আলোকে দেখানোর চেষ্টা করবো যে, কোরান - হাদিসে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যমন্ডিত জ্বিনের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নাকি নয়। 

পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যয়ন থেকে আমরা জানি যে, এই ইউনিভার্স এ যা কিছু আছে তা হয় পদার্থ নয় শক্তি। আইনস্টাইনের ভর-শক্তির সমীকরণ (E= mc^2) হতে আমরা জানি, পদার্থ ও শক্তি পরস্পর রুপান্তরযোগ্য।

আবার বিকিরণের কোয়ান্টাম তত্ত্ব  সম্পর্কিত ম্যাক্স প্ল্যাংকের সমীকরণ 

(E= nhf) থেকে আমরা জানি, শক্তি বা বিকিরণ হল কতগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেটের সমষ্টি। শক্তির এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বা প্যাকেটগুলিকে বলা হয় কোয়ান্টা বা ফোটন। আমাদের এই ইউনিভার্সে বিদ্যমান বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি, ব্ল্যাকহোল, গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ, ধূমকেতু, উল্কাপিণ্ড ও অন্যান্য জোতিষ্কসহ যা কিছু আছে তার সবই হল ভর-শক্তি। অর্থাৎ আমাদের এই বস্তুবাদী মহাবিশ্বে ভরশক্তির বাহিরে কিছুই নেই। আমাদের পৃথিবী, এর সাগর, মহাসাগর, প্রান্তর,  নদ, নদী, গাছপালা, মানুষ ও অন্যান্য  প্রাণীসহ যা কিছু আছে তার সবই আসলে ভর-শক্তি ছাড়া কিছুই নয়। 

এবার আসি জিনের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে। কোরানে বলা হয়েছে যে, জিনদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে অগ্নি শিখা থেকে এবং হাদিসে বলা হয়েছে নির্ধুম অগ্নি শিখার কথা। তাহলে এবার আমাদের জানতে হবে অগ্নি বা আগুন এবং নির্ধুম অগ্নি বলতে আসলে কি বোঝায়। 

সংক্ষিপ্ত ও সহজ করে বলতে গেলে, আগুন হলো প্লাজমা, যাকে মাঝেমাঝে ‘পদার্থের চতুর্থ দশা’ বা ‘Fourth State of Matter’ আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে | এর কারণ যে কোনো পদার্থের গ্যাসীয় রূপকে যখন যথেষ্ট পরিমানে শক্তি বা তাপমাত্রা প্রদান করা হয়, তখন সে প্লাজ্মায় রুপান্তরিত হয় | এই অবস্থায় গ্যাসীয় পদার্থটির পরমাণুর ইলেক্ট্রনগুলি মুক্ত হয়ে পড়ে যার ফলে 

অবশিষ্ট পরমাণু একটি ‘পজিটিভ চার্জ’ ধারণ করে ও তাকে তখন ‘পজিটিভ আয়ন’ বলা হয়; এই পজিটিভ আয়ন ও ইলেক্ট্রনের সমষ্টিকেই আমরা বলি ‘প্লাজমা’ | উল্লেখ্য, সব আগুনই প্লাজমা না। তাপমাত্রা এবং পদার্থটি কতটা আয়নাইজড হয়েছে সেটার ওপর নির্ভর করে তাকে প্লাজমা বলা যাবে নাকি না।তাপমাত্রা  ৩০০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর নীচে হলে তাকে প্লাজমা বলা যায় না। 

অন্যভাবে বলতে গেলে, আগুন হল একটি রাসায়ণিক বিক্রিয়া,যাকে দহন বিক্রিয়া বলা হয় । এটি একটি তাপোৎপাদী বিক্রিয়া (Exothermic Reaction)। অর্থাৎ এই বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয়। দাহ্যবস্তু, অক্সিজেন বা অন্য কোন জারক পদার্থ ও তাপ এই তিনটি উপাদানের সমন্বয়ে যে বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সাধারনতঃ তাকেই আগুন বলে। যে কোন একটি উপাদানের কমতি থাকলে আগুনের সৃষ্টি কখনোই হবেনা।

এই দহন বিক্রিয়া (Combustion Reaction) আবার দুই ধরনের হয়। যথা-

১) Complete Combustion এবং 

২) Incomplete Combustion 

যখন কোনো জ্বালানি পর্যাপ্ত অক্সিজেনের উপস্থিতিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপ পায় তখন যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং শক্তি উৎপন্ন হয় তাকে বলা হয় complete combustion বা পূর্ণ দহন। এই Complete Combustion এর সময় যে শিখার সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় নির্ধুম অগ্নিশিখা বা ধোঁয়াহীন আগুন। কারণ এক্ষেত্রে কোন ধোঁয়া সৃষ্টি হয় না। গ্যাসবার্নারে ও মোমবাতির শিখার গোড়ায় এ ধরনের আগুন তৈরি হয়। 

আবার, পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে কিংবা যথেষ্ট পরিমাণ তাপ না পেলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে তাকে Incomplete Combustion  বা অপূর্ণ দহন বলে। Incomplete Combustion-এ কার্বন মনোক্সাইড ও অন্যান্য জটিল যৌগ উৎপন্ন হয়, এগুলো এবং অবশিষ্ট হাইড্রোকার্বনগুলো ধোঁয়া হিসেবে পরিচিত। মোমবাতির শিখার উপরের অংশে, কেরোসিন, পেট্রোল, ডিজেল, কাঠ ইত্যাদিতে এই ধরনের আগুন তৈরি হয়। 

যাইহোক আবার ফিরে আসি মূল আলোচনায়। এতোক্ষনে আমরা জেনে গেছি যে, আগুন আসলে একধরনের গ্যাসমিশ্রণের বিক্রিয়াকালীন অবস্থা যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা তাপ প্রদানের ফলে সংগঠিত হয় এবং বিক্রিয়ার ফলে সেখান থেকে তাপ উৎপন্ন হয়। কাজেই আগুনকেও আমরা পদার্থ বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে ভর-শক্তি বলতে পারি। 

সুতরাং কোন কিছু যদি আগুনের তৈরী হয়ে থাকে, তাহলে ম্যাক্স প্লাংকের সমীকরণ অনুযায়ী সেটার একটা ফ্রিকোয়েন্সী থাকবে, একটা তরঙ্গ দৈর্ঘ থাকবে, সেই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের একটা রেঞ্জ বা সীমা থাকবে। 

যেমনঃ দৃশ্যমান, অবলোহিত ,  তড়িচ্চুম্বকীয়, অতিবেগুনী, মাইক্রোওয়েব ইত্যাদি বিকিরণের প্রতিটির ক্ষেত্রে তাদের আলাদা আলাদা ফ্রিকোয়েন্সি, তরঙ্গদৈর্ঘ্য ও নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি রয়েছে। কেবল দৃশ্যমান আলো তথা বিকিরণ (বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুধ, কমলা লাল) বাধে অন্যান্য বিকিরণ সমূহকে আমরা খালি চোখে দেখতে পারি না। 

তবে যতো ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বা দুর্বল শক্তির বিকিরণই হোক না কেন আধুনিক উন্নত সেন্সর মেশিন  ও ডিটেক্টর গুলোতে বিজ্ঞানীরা সেটা অবশ্যই ধরতে পারেন। 

কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ অবধি বিজ্ঞানীরা জিন/ভূত /প্রেতাত্মা নামক অতিপ্রাকৃতিক কোন কিছুর অস্তিত্ব খুঁজে পান নি। আসল কথা হল জিন,ভূত, প্রেতাত্মাদের  মতো অতিপ্রাকৃতিক কোন কিছু নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করেন না।  

বিভিন্ন ভুতুড়ে স্থানে ডিটেক্টর মেশিন গুলোতে যেসব রেডিয়েশন ধরা পরে সেগুলোকে অনেকে জিন ভুতের অস্তিত্বের প্রমাণ বলে চালানোর চেষ্টা করে। অথচ তাড়া জানেই না যে, ডিটেক্টরে ধরা পরা বিকিরণ গুলো আমাদের খুবই পরিচিত ও স্বাভাবিক। 

এই যেমন, ধরেন আপনি ভুতুড়ে স্থান নামে পরিচিত কোন এক প্রকান্ড ঝোপঝাড়ের নিকট গিয়ে যদি একটি ইলেকট্রনিক ফিল্ড ডিটেক্টর বা EMF মিটার স্থাপন করেন তাহলে দেখবেন সেখানে যন্ত্রটি অনেক সিগনাল দিচ্ছে। কিন্তু এই সিগনালগুলোকে যদি কেউ ভূত-প্রেত বা জিনের অস্তিত্ব বলে দাবি তাহলে এরচেয়ে বড় মুর্খতা আর হয় না। 

কারণ এই যন্ত্রটি বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেন বিভিন্ন ধরনের তড়িচ্চুম্বকীয়  তরঙ্গ শনাক্ত করার জন্য। আপনার পরিক্ষনীয় স্থানের আশেপাশে বিভিন্ন উৎস থেকে (যেমনঃ বজ্রপাত বা পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র থেকে সৃষ্ট চার্জসমূহ, এক্স-রে, টিভি অ্যান্টেনা, বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং, পাওয়ার লাইন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম

 ইত্যাদি) এই তরঙ্গের সৃষ্টি হতে পারে যা আপনার সেট করা সেন্সর বা ডিটেক্টরে ধরা পরে। নীচে আপনাদের জানার সুবিধার্থে  কয়েকটি ডিটেক্টরের নাম উল্লেখ করলাম। এই যন্ত্রগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনারা গোগলে খুঁজুন। 

১)  ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড  ডিটেক্টর বা EMF মিটার

২) ইলেকট্রনিক ভয়েস ফেনোমেনা বা EVP

৩) এক্সটার্নাল থারমোমিটার

৪) ডিজিটাল ইনফ্রারেড ক্যামেরা

৫) আল্ট্রাভায়োলেট লাইট ইত্যাদি। 

আবার ফিরে আসি জিন প্রসঙ্গে। হাদিস থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে,জিনেরা মানুষের মতো পানাহার, যোনক্রিয়া ও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করতে পার  এবং তাদের শ্রবণশক্তি আছে। তারা মানুষের ফেলে দেয়া হাড়-হাড্ডি খেয়ে বেঁচে থাকে। তাহলে মুমিন ভাই বোন ও ইসলামিক স্কলারদের নিকট আমার কয়েকটি প্রশ্ন। 

১) জিনদের ও কি মানুষের মতো পরিপাকতন্ত্র আছে ? না থাকলে তারা হাড়-হাড্ডি খেয়ে হজম করে কিভাবে? 

২) জিনদের কি শ্রবণঅঙ্গ আছে? না থাকলে তারা শ্রবণ করে কিভাবে ? 

৩) বলা হয়েছে জিনদের প্রকৃত আকৃতি মানবচোখে অবলোকনযোগ্য, তাহলে আমরা তাদেরকে দেখতে পাই না কেন? 

৪) জিনদের কি আমাদের মতো জনন অঙ্গ আছে?  না থাকলে তারা যোন কর্ম ও বংশবিস্তার করে কিভাবে ? 

৫) বলা হয়েছে জিনরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি ও নিজেদের মধ্যে রক্তপাত ঘটায়। জিনদের দেহ তো আমাদের মতো

রক্তমাংস দিয়ে তৈরি না, তাহলে তারা রক্তপাত ঘটায় কি করে? 

৬) পৃথিবীতে আদমকে পাঠানোর আগে জিনদের খাবার কি ছিলো ?  তখন তো আর আমরা হাড়-হাড্ডি, উচ্ছিস্ট, গোবড় এসব ফেলে রাখতাম না।   

৭) আমরা জানি আলো একধরনের শক্তি, আবার আগুনও একধরনের শক্তি। আগুন জ্বালানোর সময় তাপ ও আলো পাওয়া যায়। আবার আলোর সাহায্যেও আগুন ধরানো যায়। অর্থাৎ দুটোই একই জিনিস। তাহলে "ফেরেশতারা আলোর তৈরী এবং জিনেরা আগুনের তৈরি " এই কথার কোন বিশেষত্ব থাকলো?  

আশা করি এর একটি গ্রহনযোগ্য  উত্তর আপনারা আমাকে দিবেন।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929