অ্যালোপ্যাথি বনাম গেলোপ্যাথি (পার্ট-২)

প্রবীর ব্যানার্জী


Nov. 21, 2024 | | views :291 | like:0 | share: 2 | comments :0

আলোচনা যত এগোচ্ছে তত একটা ব্যাপার উঠে আসছে যে আপনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবার বিরুদ্ধে যতই লিখুন আমি কিন্তু এই চিকিৎসা করিয়ে ফল পেয়েছি। কেউ বলছে আঁচিল সেরে গেছে, কেউ বলছে অর্শ নিরাময় হয়েছে এসব। আজকে তাহলে রোগ সারা না সারা এবং তাতে ঔষধ এর অবদান কখন আসছে সেটা নিয়ে আলোচনা করি।

আসলে বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার অনেক অগ্রগতি সত্ত্বেও সব রোগ নিরাময় করা যায় না, নিরাময় যোগ্য সব রোগও সবসময় সারে না। কিছু কড়া ঔষধের প্রতিক্রিয়ায় মানুষ ভীত আর বিরক্ত - প্রতিষ্ঠিত ডাক্তারদের অনেকেরই দরদের অভাব, দায়িত্বহীনতা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার পরিচয়ে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান ও চিকিৎসকদের সীমাবদ্ধতার ফলেই মানুষের হোমিও প্রীতি ঘুচছে না। আর আছে ফল পাওয়ার প্রশ্ন। অনেক অসুখই এমনকি মারাত্মক হলেও প্রকৃতির নিয়মেই আপনি সেরে যায় বা কমে আসে। আবার কখনো কখনো রোগ সারার মূলে থাকে রোগীর মনের বিশ্বাস। হোমিওপ্যাথি  তখন পাশাপাশি চিকিৎসা হিসাবে চললে ঐ ঝড়ে বক মরার নিয়মে পসার বাড়ে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ এর  ফল ঘটতে পারে অভিভাব- স্বাভিভাবের জন্য(Suggestion and auto suggestion). হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহৃত পদ্ধতি ও ওষুধ কে চিকিৎসা কেন্দ্রে যাচাই করার বহু প্রচেষ্টা থেকে কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায় নি। (Great Soviet Encyclopedia, 3rd edition,1970)

ভারতবর্ষে একদিকে বাড়ছে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর অনাহার। অপরদিকে আধুনিক চিকিৎসকদের মানসিকতা সেবার নয়; না হলে সুশিক্ষিত চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা হাজারে হাজারে ধনবান ইংল্যান্ড আমেরিকাবাসীর চিকিৎসা করাতে সাগর পার করতেন না। দুঃস্থ, রুগ্ন মানুষ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সংস্পর্শে আসতেই পারে না বা খরচে কুলিয়ে উঠতে পারে না। ভারতে তাই হোমিওপ্যাথের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

ভারতবাসীকে বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা যোগানোর দায় থেকে ভারতের শাসকরাও যেন কিছুটা হালকা হতে চেয়েছিলেন। তাই কি ১৯৭৩ সালে পাশ হয়েছে হোমিওপ্যাথিক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল আইন আর ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হোমিওপ্যাথিক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল? ভারতে যার বয়স সওয়া-শ বছর সেই হোমিওপ্যাথিকে দেশীয় চিকিৎসার মর্যাদা দেওয়া হলো। বলা বাহুল্য হোমিও ঔষধ এর বিশুদ্ধতা বা গুনমানের যাচাই করার কোনো ব্যবস্থা নেই।


ভারতবর্ষ মন্ত্র, তন্ত্র, তাবিজ কবচ, জ্যোতিষ, হাত দেখার দেশ। মানুষের শরীর ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এখানে অস্বাভাবিক নয়।

কিন্তু আই.এম.এ. র মতো সংস্থাগুলো জনচিকিৎসার ডিপ্লোমা কোর্স চালু করার বিরুদ্ধে সরব হলেও চলতি ভূয়া চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর ব্যাপারে নীরব কেন?

বিজ্ঞানে সত্যানুসন্ধানে আলোচনা ও সমালোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনসাধারণ বিশেষ করে বিজ্ঞানকর্মীরা-হোমিওপ্যাথি কতটা বিজ্ঞানসম্মত তার নিজেরাই বিচার করতে পারেন। অ্যালোপ্যাথি হাসপাতালের জনপ্রিয়তা, উক্ত চিকিৎসা তে ভালো ছাত্র ছাত্রীদের আকর্ষণ ও লোকের দায়ে পড়ে অবশেষে অ্যালোপ্যাথের শরণাপন্ন হওয়া তার প্রমাণ বলে মনে হয়। নানা রকম ম্যাজিকিওর গল্প ছাড়া এবিষয়ে বিজ্ঞান সম্মত সুসংবদ্ধ তথ্য কোথায়? বহুক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসার নামে রোগী বিনা চিকিৎসায় থাকে এবং বহু অসুস্থ শিশু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যথাযথ চিকিৎসা সময় মতো পায় না। ফলে বহু শিশু মারাত্মক ভাবে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। হোমিও চিকিৎসা তে কত লোকের কত ক্ষতি হয়েছে তার পরিসংখ্যান সংগ্রহ করতে পারলেও তা কম ভয়াবহ হবে না।

এবার আসি মূল কথায়।যারা বলছেন কি একটা ফুজা না ভুজা খেয়ে আঁচিল সেরে গেছে তাদের কথায়। আলোচনার শুরুতে ঠিক করে নিতে হবে হোমিওপ্যাথি কে কিভাবে দেখবেন:

১। যেভাবে এর ব্যবহার বা প্রয়োগ হচ্ছে সেভাবে না 

২। এর তাত্ত্বিক ভিত্তি ও দর্শন নিয়ে?

কোনো কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি কে হোমিও বলে চেনা যাবে কি ভাবে?

যেভাবে এর প্রয়োগ হচ্ছে তা দেখলে কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাবে না। কেউ কেউ গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে রোগী আকৃষ্ট করেন, কেউ আবার নানা উপসর্গে হোমিও ওষুধ এর নামে অ্যাসপিরিন, এন্টেরোকুইনল, অ্যান্টিবয়োটিক স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দেন। হোমিও ঔষধ এ কি আছে যাচাই করা দুষ্কর, কারণ হ্যানিম্যানের উপদেশ মতো বেশিরভাগ হোমিও চিকিৎসক নিজেদের ঔষধ নিজেরা তৈরি করেন না, এমনকি কোন উদ্ভিদ, কোন্ প্রাণী, কোন্ ধাতব যৌগ ঔষধ এর উৎস, তাদের এক খটমট ল্যাটিন নাম ছাড়া বস্তুর সাথে পরিচিত নন। তাই হোমিওপ্যাথি অনুজ্ঞসূচক সদৃশ বিধান যেখানে প্রয়োগ হচ্ছে তাকেই হোমিওপ্যাথি বলতে হবে। হোমিওপ্যাথির বাইবেল অর্গানন অফ মেডিসিন এর ভিত্তিতেই আলোচনা করতে হবে। এই হিসেবে কিন্তু ঐ থুজা হোমিও ঔষধ ক্যাটাগরিতে পড়ল না।


Double blind trial test কি?

এতে  নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত বেশ কিছু রোগী কে সমান দুটি দলে ভাগ করা হয়।একদল কে প্রস্তাবিত ঔষধ দেওয়া হয়, অন্যদল পায় একই রকম স্বাদ গন্ধ যুক্ত ঔষধ গুন হীন পদার্থ বা নকল ওষুধ(placebo)। কে কোন টি পেল তার রোগী ও পরীক্ষকের কাছে অজ্ঞাত থাকে, এই কারণে একে ডাবল ব্লাইন্ড টেষ্ট বা জোড়া অন্ধের পরীক্ষা বলা হয়। কেবলমাত্র কিছু নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক, যারা পরীক্ষা শেষে তথ্যবিশ্লেষনের কাজে যুক্ত হবেন, তাঁরা এটি জানবেন। নির্দিষ্ট সময় পর পর রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও নথিভুক্ত করা হয়। পরীক্ষা শেষে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দ্বিতীয় দলটির তুলনায় প্রথম দলটির রোগীদের শারীরিক অবস্থার তুল্যমূল্য বিচার করা হয়। যা থেকে রাসায়নিক ঔষধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় দলটি কন্ট্রোল গ্রুপ। ঔষধ বিজ্ঞানে একটি কথা আছে - disease can be cured with medicine, with out medicine,inspite of medicine.তাই চিকিৎসা ও রোগ সারার ভেতরকার সম্পর্ক সত্যিই জটিল। রোগ আক্রমণ প্রতিহত করা ও অসুস্থতা থেকে মুক্তি পাওয়ার পেছনে যেমন immunity  বা অনাক্রম্যতা কাজ করে তেমনি অনেক রোগ আবার স্ব-নিয়ন্ত্রিত (self limiting diseases) নির্দিষ্ট সময় পর এমনিতেই সেরে যায়। অধিকাংশ ভাইরাস ঘটিত রোগের ক্ষেত্রে যা সত্য।

তাই আধুনিক চিকিৎসায় ঔষধ হিসেবে প্রস্তাবিত প্রতিটি রাসায়নিকে প্ল্যাসিবো নিয়ন্ত্রিত জোড়া অন্ধের (placebo controlled double blind trial) পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে হয়। 

বিকল্প চিকিৎসা যেমন এই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সেসব দায় নেই, কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই দিব্যি চলছে। এখানে যে কথাটি স্পষ্ট করে বল দরকার সেটা হলো কতজন ব্যবহার করেছে না বা বিশ্বের কটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সেটা দিয়ে কোনো ঔষধ বা চিকিৎসার কার্যকারিতা যাচাই করা যায় না। এটি কেবল করা যায় কতকগুলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাহায্যে। জোড়া অন্ধের পরীক্ষা তেমন একটা পদ্ধতি।

বিশ শতকের শেষ দিকে হোমিওপ্যাথি যাচাই করে দেখার মতো বেশ কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা জমা হয়ে ছিল। যেগুলো তে হোমিও কার্যকারিতা আছে বলে মনে হয়েছে তার বেশিরভাগই পরীক্ষা নিরীক্ষার ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম কানুন মানা দরকার তাই মানা হয়নি এবং প্রবন্ধ প্রকাশনার ক্ষেত্রেও নিরপেক্ষতা ছিল না।খালি সাফল্য গুলো নথিভুক্ত করা হয়, একে বলে publication bias.

এরপর বহুবার পরীক্ষা করা হয় বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন ভাবে। তাতে যেটা উঠে এসেছে তাহলো, গবেষকরা হোমিওপ্যাথি তে রোগসারানোর পেছনে প্ল্যাসিবো ছাড়া অন্য কিছুর ভূমিকা দেখতে পাননি।

আজ যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না,কাল তার ব্যাখ্যা পাওয়া যেতে পারে, অথবা ব্যাখ্যা না পেলেই কোনো কিছু বর্জনীয় হয়ে যায় না এই সঠিক বক্তব্য থেকে,আজ যার ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না সেরকম সব কিছু কে স্বীকৃতি দেওয়াটাও আবার বিপরীত ধরনের ভ্রান্ত মানসিকতা।

‌পর্ব- ৬

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে অনেক আলোচনা হলো।এবার আসি আরেকটি চিকিৎসা পদ্ধতিতে যেটা হোমিওপ্যাথির মতো য়ুরোপে শুরু হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তার নাম নেচারোপ্যাথি।

তবে হোমিওপ্যাথির মতো এর একক জন্মদাতা নেই। এবিদ্যা নিজের খেয়ালে বেড়েছে। এই বিদ্যার মূল মন্ত্রটি হলো প্রকৃতি অসুখ সারিয়ে দেয়।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ভেষজ ও শল্য ব্যবহৃত হয় না।কেবল শতাধিক বিচিত্র অভিনব নিরাময় পদ্ধতি বলা হয়েছে। এই বিচিত্র বিস্তারের জন্য নির্দিষ্ট কোনো তত্ত্বগত কাঠামো খুঁজে পাওয়া যায় না প্রাকৃতিক চিকিৎসা বিদ্যা বা নেচারোপ্যাথিতে।

প্রথম যুগের প্রকৃতি চিকিৎসকরা ছিলেন অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীর য়ুরোপীয় ডাক্তাররা। ভিনসেন্ট প্রিনসিজ্ আর ফাদার সেবাস্টিয়ান নেইপ ছিলেন জল চিকিৎসার প্রবর্তক(Hydrotherapy)। অ্যাডলফ্ জাস্ট এর 'রিটার্ন টু নেচার’ বইতে বলা আছে - খালি জমির উপর শুয়ে,খালি পায়ে ভেজা ঘাস বা বালির উপর হেঁটে এবং কাদার প্রলেপ গায়ে মেখে কিভাবে বিভিন্ন অসুখ সারানো যায়। এই ধরনের আরেকটি বইতে লুই খুনের লেখা, সব ধরনের ওষুধের বিরোধিতা করা হয়েছে। তার পরিবর্তে অনুমোদন করা হয়েছে বাষ্প - স্নান, অবাধ সূর্যালোক, নিরামিষ খাবার এবং শুধুমাত্র গমের রুটি। চিকিৎসক অ্যানটোইন বেশ্যাম্প এর দৃঢ় অভিমত ছিল, রোগ হলেই কেবল রোগ জীবাণু জন্মায়,অন্য কোন ভাবে জীবানু আসতে পারে না। শেষে বলতে হয় বেনেডিক্ট লাস্ট এর কথা,ফাদার নেইপের শিষ্য,যাকে আমেরিকান নেচারোপ্যথি জগতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রবর্তী ব্যাক্তিত্ব বলে চিহ্নিত করা হয়। তিনি নিউইয়র্কে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও এবং নিউ জার্সি ও ফ্লোরিডায় নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। অনেক বইও লিখেছেন ও পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন তার মধ্যে  নেচারস প্যাথ, উল্লেখযোগ্য। এবং প্রায় ষোল বার গ্রেপ্তার বরণ করেছেন ওষুধ বিশ্বাসীদের সাথে সংগ্রাম চালাতে গিয়ে।

এছাড়া ম্যাকফোডেনের পাঁচ ভল্যুমের সুবিশাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফিজিক্যাল কালচার (১৯১২) অপচিকিৎসার পরিধিতে বৃহত্তম কর্মযজ্ঞ। চার নম্বর ভল্যুমের ৫৭২ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ অসুখের কথা তেমন পোলিও, ক্যানসার ইত্যাদির চিকিৎসা সহ ম্যাকফাডেনের নিজস্ব গৃহ চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে বিশেষ খাবার,ব্যায়াম এবং জলচিকিৎসা। তেমন, ক্যানসারের নিরাময়ের জন্য প্রথমে উপবাস, তারপর কয়েকটি ব্যায়াম, শেষে সঞ্জীবনী কারক কিছু পথ্য ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। রোগী কে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয় নি। বরং বইতে ঐ অধ্যায়ে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে যে রোগ নিরাময়ে কোনো ঔষধ নেওয়া চলবে না। তিনি বিশ্বাস করতেন ক্যানসার কেবলমাত্র আঙ্গুরের পথ্য দিয়ে সারানো যাবে। এমনকি তিনি ঘোষণা করেন যে,যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে আঙ্গুর খাইয়ে ক্যানসার ভালো করা সম্ভব নয় তাহলে তিনি দশহাজার ডলার দিতে প্রস্তুত আছেন। প্রসঙ্গত য়ুরোপের আঙ্গুর উৎপাদন কারী অঞ্চলে আঙুরের সর্বরোগহর গুনের কথা সবার জানা, ঠিক তেমন ছাগলের দুধের গুনাবলী, সেরকমই।

উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এখানে ওখানে ব্যাঙের ছাতার মত নেচারোপ্যাথি স্কুল গজিয়ে ওঠে। বেশিরভাগ স্কুলেই গুটিকয়েক অগোছালো ঘর, রাতে ক্লাস এবং অল্প কয়েকটি লেকচারের পর জবরদস্ত ডিপ্লোমা। ফ্রেমে বাঁধাই হয়ে এই সার্টিফিকেট গুলো একজন গ্র্যাজুয়েটের ঘরের দেয়াল চমৎকার অলংকৃত করত। এইসব স্কুলগুলোর নিজেদের মধ্যে কোনো ঐক্য বা সমঝোতা ছিল না। প্রায়শই কিছু অপচিকিৎসক তাদের উন্মাদ ভাবনাকে প্রয়োগ করতে এক একটি আজব পদ্ধতি চালু করত। তেমন, একটা উদাহরণ হলো, চোখের আইরিস (Iris) সারাতে বিচিত্র পদ্ধতি (Iridiagnosis) যা অবৈজ্ঞানিক শুধু নয় বিপজ্জনকও বটে।

অনুরূপ চরিত্রের আরেকটি প্রকৃতি চিকিৎসা পদ্ধতির সন্তান হলো Zone therapy. হাতে কিংবা পায়ের আঙ্গুলে চাপ প্রয়োগ করে অথবা দেহের অন্য কোনো আক্রান্ত অংশে বা জোনে চাপ দিয়ে শারীরিক বেদনার উপশম পদ্ধতি। আবিষ্কারক ছিলেন ডাক্তার উইলিয়াম এইচ ফিটজেরাল্ড, যিনি বেশ কয়েক বছর সেন্ট ফ্র্যান্সিস হাসপাতালের নাক ও গলার উচ্চ পর্যায়ের সার্জেন ছিলেন। অনেক রোগ উপশমে তাদের অদ্ভুত অদ্ভুত সব দাওয়াই ছিল। তেমন, চুল পড়ে যাওয়ার দাওয়াইয়ে রয়েছে বিচিত্র নিরাময় ব্যবস্থা -  দুহাতের নখ আড়াআড়ি ভাবে দ্রুত ঘষতে হবে একটানা তিন চার মিনিট। কিছুক্ষণ পর এই ঘর্ষণ চালাতে হবে সারাদিন ধরে। এতে শরীরের সবকটি জোনের পুষ্টি বৃদ্ধি হবে এবং গোটা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, মাথার খুলিতেও সেই উত্তম রক্ত সঞ্চালনের প্রতিফলন দেখা যাবে।

এ-ধরণের আজব চিকিৎসা কাউকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম কিনা এই প্রশ্ন থেকে যায়। অথচ শতশত প্রকৃতি চিকিৎসক একে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। ভাবতে পারেন মেয়েদের মাসিকের গোলমাল সারবে জিভের কয়েকটি অংশে চাপ দিলে, মাথা ব্যাথা সারাতে চাপ দিতে হবে মুখের ভিতর টাকরায়। অথচ এই থেরাপির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তারা বহু দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি দিয়েছেন মানুষ কে।

নেচারোপ্যাথির মূল বিষয় প্রাচীন মত কে ধরে রাখা হয়েছে। যেমন - ব্যাধি কখনো বাইরে থেকে আসা রোগ জীবাণু দ্বারা হয় না, হয় দেহের ভেতর প্রাকৃতিক নিয়ম অবমাননার কারণে। এই চিকিৎসা জগতে সকলেই মনে করেন ঔষধ মাত্রই ক্ষতিকারক, ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।

একজন নেচারোপ্যাথ কখনো ঔষধ ব্যবহার করেন না পরিবর্তে নির্ভর করে ভিটামিন, খনিজ, শাকসবজি,ফলের রস, গরুর কাঁচা দুধ আর সুষম খাবার এর উপর। অ্যালোপ্যাথ ডাক্তাররা অসুখ চেপে দেয়, নিরাময় করে না। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতে নেচারোপ্যাথি শিক্ষার জন্য ১০টি কলেজ আর ২৪টি হাসপাতাল রয়েছে। (Ministry of AYUSH, 2010)


অন্তিম পর্ব

আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, নেচারোপ্যাথি নিয়ে আলোচনা হলো। আরও কিছু জনপ্রিয় বিকল্প চিকিৎসা আছে। যার মধ্যে অন্যতম আকুপাংচার। আলোচনা তো চলতেই থাকবে। আর যার যে প্যাথিতে আস্থা সে তার পক্ষে বলতে থাকবে। এ বলার মধ্যে মূল বিষয়বস্তু আমি ওমুক কে সারতে দেখেছি তাই ওটা বিজ্ঞান। আমার এক বন্ধু একদিন বলছে আমি আমার বৃদ্ধ মায়ের জন্য অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু কাজ দিয়েছে রামদেবের তেল। শুধু তাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। বাজারে যে সমস্ত স্বাস্থ্যের ম্যাগাজিন আছে তারাও এসব অবৈজ্ঞানিক তথ্য পরিবেশন করে। ধরুন পেটের গোলমাল নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল প্রথম দিকে যে কথা বলছেন সেগুলো যুক্তিপূর্ণ যেমন পায়খানার বা কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীরা একটু শাক জাতীয় খাবার যার মধ্যে ফাইবার আছে সেগুলো খান, যাদের অম্বলের রোগ তারা একটু সময়মতো খাওয়া দাওয়া করুন, রাত করবেন না,জল বেশি খান, এগুলো বলার পর আলোচনা শেষ করছেন এই ভাবে - এতেও কাজ না হলে নিকটবর্তী কোনো হোমিওপ্যাথ বা যোগ কেন্দ্র তে গিয়ে যোগাযোগ করুন। শুধু তাই নয় অনেক স্বাস্থ্যের ম্যাগাজিন জ্যোতিষ বইয়ের রেফারেন্স দেন।

মূল কথা হলো আপনি কিছু খেলেন আর কিছু নিরাময় হলো এই দুটি ঘটনার মধ্যে যুক্তিগ্রাহ্য কোনো কারণ নেই আপনি তর্ক শাস্ত্রের যেকোনো বইতেই এটা পেয়ে যাবেন।কাজেই এত তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে আসবেন না। ডক্টর কভ্যুরের মত চলুন, উনি যখন হসপিটালে তখন ঔষুধ খাওয়ার পর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একজন যাজক এসে তাকে বললেন যীশুর আশির্বাদ মিশ্রিত জল বা চরণামৃত খেতে। ডাক্তার কভ্যুর তাকে নিরস্ত্র করলেন এই বলে যে দাঁড়ান এখুনি ঔষধ খেলাম এখন যদি চরণামৃত সেবন করি তাহলে কার কারনে ভালো হলাম সেটাই বুঝতে পারব না।

দেখুন তাদের বেশি সময় নেই পড়ার জন্য তাদের জন্য খুবই সংক্ষিপ্ত একটা লাইনে এবার বিকল্প চিকিৎসাটি কেন অবৈজ্ঞানিক লিখে দেওয়া যাক।

আয়ুর্বেদ - ত্রিদোষ তত্ত্ব:

- শারীরস্থানগত ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

হোমিওপ্যাথি - লঘুকরণের নিয়ম:

- রসায়নের মূলগত ধারণা অ্যাভোগাড্রো প্রকল্পের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।

আকুপাংচার - ছুঁচ ফুটিয়ে রোগের উপশম:

- শারীরবিদ্যার মূল ধারণার সাথে বিরোধ।

য়ুনানি – রসতত্ত্ব:

- শারীরস্থানগত ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

মূত্র চিকিৎসা - মূত্র সেবনে রোগ মুক্তি:

- শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়ায় উৎপন্ন অপ্রয়োজনীয় ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলি মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়।

অক্সিজেন থেরাপি - শরীরের ভেতর প্রয়োজনের অতিরিক্ত অক্সিজেন ও ওজোন গ্যাস ঢোকানো।

- শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, ওজোন গ্যাসের মারাত্মক বিষক্রিয়া।

মোদ্দা কথা হলো যে খোদার উপর খোদকারি না করে অর্থাৎ প্রকৃতির উপর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ না করে প্রকৃতির সাহায্য নিয়ে রোগ সারিয়ে তোলা। অথবা যা কিছু অবিকৃত, তার প্রকৃত যা কিছু মানুষের হাতে পরিবর্তিত তা ক্ষতিকর। 

- এইরকম একটা অবৈজ্ঞানিক ধারণা বিকল্প চিকিৎসা ও চিকিৎসকের পূঁজি। তারা শুধু মানুষের নয় একই সঙ্গে তাঁর আত্মার ও চিকিৎসা করেন।

আধুনিক চিকিৎসা কি ত্রুটি মুক্ত?

সেই মাধ্যমিকের রচনা লেখা। বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ? স্পটত: ক্ষমতাধরের হাতে আধুনিক চিকিৎসা। রাষ্ট্র চেষ্টা করে, সার্বজনীন চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করতে। কিন্তু সেখানে পরিকল্পনা ও আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা তো গলাকাটা চিকিৎসা। সেখানে ভুড়িভুড়ি অভিযোগ। অযৌক্তিক বিল,স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও অহেতুক আই.সি.ইউ.তে থাকার বিল, কোভিড এর মতো রোগের জন্য আঠারো লাখ টাকা বিল, মৃত পেশেন্টের ভেন্টিলেশনে রাখার বিল, টাকা না পেলে বডি না ছাড়া, একই টেষ্ট বারবার করিয়ে  ক্লিনিক্যাল ল্যাবের পকেট শক্তিশালী করা ও কমিশন ভোগ, এই হয়রানি মানুষের নিত্য সঙ্গী।

অপরদিকে সরকারি হাসপাতালে বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অপ্রতুল চিকিৎসক, রোগীর জন্য কম সময় ও দরদ কম দিয়ে রোগী দেখা, ফলে ঠিক ঠাক রোগ নির্ণয় না হওয়া, হাসপাতালে ভর্তি করতে সমস্যা, অপ্রতুল বেড, নার্সিং স্টাফেদের দূর্ব্যবহার, দালালচক্র, ঔষধ না পাওয়া ইত্যাদি কারণে অনেকেই আধুনিক চিকিৎসা বিরূপ হয়ে পড়েছেন। তাই গ্রামেগঞ্জে য়ুনানি, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি, জলপোড়া, তেলপোড়া, রামদেব, আকুপাংচার বা পাথর (জ্যোতিষ) জনিত চিকিৎসার রমরমা। এই পরিস্থিতিতে সরকার ও যেহেতু আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে অপারগ তাই বিকল্প চিকিৎসা সেবাকেই সরকারি অনুমোদন দিতে ব্যস্ত। এতে সাপ মরেনা লাঠিও ভাঙে না। অথচ চিকিৎসা সবার অধিকার এবং সেটা আধুনিক চিকিৎসা সেবা। এক কোভিড এসে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কঙ্কাল দেখিয়ে দিল।

তবু কিছু কথা বলতে হচ্ছে:

আধুনিক চিকিৎসার বিরুদ্ধে একটা নেগেটিভ ক্যাম্পেন সবসময় চলছে। যেটা আবার অবৈজ্ঞানিক।

১। অধিকাংশ বিকল্প চিকিৎসা নানাভাবে অস্ত্রচিকিৎসার (অপারেশন বা সার্জারির) বিরুদ্ধাচরণ করে। আবার আধুনিক ওষুধের নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অস্ত্রচিকিৎসা বিষয়ক সত্যিকারের ঝুঁকি ও অমূলক ভয় অনেক মানুষকে আধুনিক চিকিৎসা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।এ নিয়ে অসম্পূর্ণ ও ভুল তথ্য এবং চিন্তাচেতনায় বাসা বেঁধে থাকা অজ্ঞতার কারণেই অনেকের কাছে আধুনিক চিকিৎসা ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছে। অপরপক্ষে বিকল্প চিকিৎসা সেবা তে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে দাবি করা হয়। হোমিওপ্যাথির মতো মিথস্ক্রিয়াহীন চিকিৎসার ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বিভিন্ন দেশের বিকল্প চিকিৎসার সরবরাহকারীরা টিকা দেবার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার ভয়ংকর চেষ্টা চালাচ্ছে। ডাক্তার সার্জারির পরামর্শ দিয়েছেন অথচ তা না করে অনেকেই বিকল্প চিকিৎসার দ্বারস্থ হচ্ছেন।

২। আধুনিক চিকিৎসক কখনো কখনো রোগের কারণ খুঁজতে ব্যর্থ হন এবং রোগীর রোগ যন্ত্রনার অবসান ঘটাতে পারেন না। এই অবস্থায় সরাসরি রোগী কে তারা মতামত জানিয়ে দেন। অথচ বিকল্প চিকিৎসার কারবারিরা কখনো হাল ছাড়েন না কারণ এই রোগী তার মূলধন।

৩। এই মুহূর্তে এইডস্,ক্যান্সার রোগীর জীবনকাল হয়তো দীর্ঘায়িত করতে পারে আবার আর্থ্রাইটিস  বা অন্যান্য বয়সজনিত সমস্যা সাময়িক ভাবে ভালো করে তুলতে পারে কিন্তু তাকে নিশ্চয়তা দিতে পারে না। আধুনিক চিকিৎসক এক্ষেত্রে সত্যিই অসহায়। আধুনিক চিকিৎসার অসম্পূর্ণতা আছে ঠিকই, সময়ের সাথে সাথেই তার ত্রুটি মুক্ত হয়ে উঠবে। অপরদিকে বিকল্প চিকিৎসা যে কোনো রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় দাবি করে। এখানে ভরসাহীনতার কোনো জায়গা নেই।সারা পৃথিবীতে এমন অনেক ক্যান্সার পেশেন্ট পাওয়া যাবে যারা রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি বাতিল করে নানা ধরনের অপ্রমাণিত ও অপরীক্ষিত চিকিৎসার দিকে ঝুঁকে গেছেন।

৪। পিছিয়ে পড়া দেশে বিশেষত আফ্রিকা ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে দেশজ চিকিৎসা খুব কম খরচে পাওয়া যায়। আমদের দেশে স্ব-প্রশিক্ষিত কবরেজ বা হোমিওপ্যাথ নামমাত্র দক্ষিণায় রোগী দেখেন। কিন্তু তুলনায় আধুনিক চিকিৎসকদের ভিজিট অনেক বেশি। আবার য়ুরোপ ও আমেরিকায় লাইফস্টাইল ট্রিটমেন্ট (বিকল্প চিকিৎসা) নিতে হলে রীতিমত ভালো রকমের গাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে।

৫। তবে বিকল্প চিকিৎসকদের অধিকাংশ পেশার কারণে নব্বই শতাংশ আধুনিক চিকিৎসার ঔষধ ব্যবহার করেন।

পরিশেষে যে কথা বলে বিদায় নেব। মোটের উপর বিকল্প পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বিকল্প চিকিৎসার কোনো পদ্ধতিকরণ যদি কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয় তাহলে সেটি বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা হয়ে উঠবে আর ‘বিকল্প’ থাকবে না।

চিকিৎসার বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও যেভাবে রোগী কে পরিষেবা দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে তার প্রতারণার নামান্তর। বিকল্প চিকিৎসা যে ভাবে রোগীর চিকিৎসা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আছে বলে গলা ফাটায় তাতে স্বাধীনতা শব্দটির অপব্যবহারই হয়। অর্থহীন অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা বেছে নেওয়ার তাৎপর্য কি?

বিকল্প চিকিৎসার কিছু পদ্ধতি রোগীর শরীরে সাংঘাতিক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। কিরোপ্রাকটিক থেরাপিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীর উপর এক্স-রে প্রয়োগ করা হয়। অবাঞ্ছিত এই বিকিরণ বিশেষত: শিশুদের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। কখনো কখনো বিকল্প চিকিৎসা দাবি করে জৈব রাসায়নিক বাস্তবায়ন না থাকলেও শুধুমাত্র প্ল্যাসিবো চিকিৎসা হিসাবে এদের কৃতিত্ব কে স্বীকার করা উচিত। উত্তর হলো সঠিক বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা সেবা থাকা সত্ত্বেও তা পাওয়ার অধিকার থেকে রোগীকে বঞ্চিত করে উপরন্তু গাঁটের পয়সা খরচ করে কার্যকারিতা হীন বিকল্প চিকিৎসা নেবার কোনো মানে আছে? জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য দিয়ে শেষ করছি। There is no alternative medicine. There is only scientifically proven, evidence- based medicine supported by solid data or unproven medicine, for which scientific evidence is lacking.

সূত্র:

বিজ্ঞানের ইতিহাস, সমরেন্দ্র নাথ সেন, ১ম খন্ড।

Medical Encyclopedia, Collins,1978

Encyclopedia Britannica, 15th Ed

বিজ্ঞান কে মুখোশ করে, মার্টিন গার্ডনার.

বিকল্প চিকিৎসা চিকিৎসার বিকল্প, মুক্তচিন্তা পাবলিকেশন, সুব্রত রায়।

Organon of medicine, 5th, Ed, S Hahnemann

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929