ভারতীয় ইতিহাসের আরব্যকরণ এবং রাজনীতি
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 20, 2024 | | views :485 | like:3 | share: 2 | comments :0
একটি মিথ্যা ও ভ্রান্ত ইতিহাস বর্তমানের social media তে দেখা যায়। [1] ভারতকে স্বাধীন করতে যদি দশজন হিন্দু প্রাণ দিয়ে থাকে তাহলে ৯০ জন মু সলমান প্রাণ দিয়েছিলো। এই ইতিহাস নাকি বিজেপি আরএসএস মুছে ফেলেছে! অথচ মুসলিম লীগের অন্যতম লিডার, সাংবাদিক, লেখক আবুল মনসুর আহমদ তার বিখ্যাত বই [ ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ ] বইতে লিখেছেন, [2] মুসলমানরা ভারতের স্বাধীনতা চায়নি। তাদের মূল আগ্রহ ছিলো তুর্কী খিলাফত নিয়ে। সেই খিলাফত ও তার খলিফাকে রক্ষার জন্যই তারা মহাত্মা গান্ধির সমর্থন পাওয়ার আশ্বাসে অসহোযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলো। পরে খিলাফত বিলুপ্ত হয়ে গেলে সেই ভাবে মুসলিমদের আর আগ্রহ দেখা যায়নি ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে...।
আবুল মনসুর আহমদ আত্মসমালোচনা করে এই স্বীকারোক্তি করেছিলেন যে, মুসলিম লীগের একজনও তারা ভারতের স্বাধীনতা চায়নি! আজকের বুর্জোয়া কমিউনিস্টরাই ‘ওহাবী আন্দোলনের’ নাম দিয়েছিলো ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’! তীতুমীরের মত একটা ইসলামিক মৌলবাদী কে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত করতে চেয়েছে। কিন্ত কাল মার্ক্স তার বই - [3] [ MARX NOTES ON INDIAN HISTORY] তে লিখেছেন -Also, formidable disturbance at Barasat, near Calcutta, where bloody fight broke out between Moslem fanatics under Titu Mir and Hindus. British regiment put the rioters down (p.129) এর পরেও আজকের বুর্জোয়া রা কাল মার্ক্সকে চাড্ডি বলতে দুই পা পিছু হবে না।
হাজি শরীয়তুল্লাহ-তীতুমীর-দুদুমিয়ারা এই বঙ্গে হিন্দুয়ানী বিরোধী আন্দোলন করে বাঙালি মুসলমানকে তাদের সংস্কৃতি থেকে বিচ্যুত করে ফেলে। হিন্দুদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি করে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যতা তৈরির আন্দোলন ছিলো ওহাবী আন্দোলন। আজকে যাদের সালাফি বা আহলে হাদিস হিসেবে চেনে তীতুমীর-শরীয়তুল্লাহ ছিলেন সেই মতবাদের আদিপুরুষ। তাদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামী বলে আমাদের সামনে পরিচিত করেছে এই বুর্জোয়া বামগুলি। তাদের ছানাপোনারা যখন আমাদের ইসলাম শেখাতে আসে, ইতিহাস শেখাতে আসে, বিজেপি আরএসএসের ইতিহাস বলে সত্যকে মুছে ফেলে তখন ভারতের হিন্দুদের কপালে দুঃখ আছে বলতেই হবে!
এইসব বামদের কাছে প্রশ্ন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ কেন করেছিলেন যদি হিন্দু মুসলমান একই বৃন্তের দুটি কুসুম হয়ে থাকবে? নিরোদ সি চৌধুরী দেখিয়েছেন ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার ইতিহাস অনেক পুরোনো। সাতশো বছরের মুসলিম শাসনে স্থানীয় হিন্দুদের উপর মুসলিমদের একেশ্ববাদ, তাদের কালচার, শাসক হিসেবে, ধর্মগুরু হিসেবে যে আধিপত্য চলেছে সেখানে কি করে সুসম্পর্ক তৈরি হবে? যে মুসলমানরা মনে করত ইংরেজ তাদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে সেই ক্ষমতা নিজের হাতে শাসক হিসেবে বুঝে পাওয়াই লক্ষ্য সেই জনগোষ্ঠি কি করে হিন্দুদের ভাই মনে করবে? এরা তো হিন্দুদের প্রজাই মনে করবে। হিন্দু কমিউনিস্টদের মুখে ঝামা ঘষে আবুল মনসুর আহমদ লিখেছেন।
[5] মুসলমানরা নিজেদের জন্য পদ পদবী পাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলো। বেঙ্গল প্যাক্ট করতে তাদের আগ্রহ ছিলো বিপুল কারণ এখানে রাজনীতি ও সরকারী চাকরিতে লোভনীয় কোঠা সুবিধার চুক্তির কথা বলা হয়। সেই মোতাবেক দেশবন্ধু যখন কোলকাতার মেয়র নির্বাচিত হন তখন তার ডেপুটি করা হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। বেঙ্গল প্যাক্ট আদৌ হিন্দু মু সলমান ঐক্য নয় বরং বিবাদমান দুটি শত্রুর মাঝে শান্তি চুক্তি হচ্ছে বলেই মনে হয়। বস্তুত এরকম চুক্তি করে কখনোই ঐক্য করা সম্ভব নয়। বেঙ্গল প্যাক্টের চুক্তির এই ধারাগুলির দিকে একটু তাকান-
রাজনীতির পঞ্চাশ বছর - বই থেকে একটি পেজ পুরোটাই তুলে দিলাম। (p.162,163)
[6] কমরেড এম. এন. রায়ের প্রভাব জিন্না - সুভাষ মোলাকাত ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও তার একটা ছাপ আমার মনে স্থায়ী হইয়াছিল। আমি নয়া ধারায় চিন্তা করিতে শুরু করি। এই চিন্তায় কমরেড এম. এন. রায়ের সাহচর্য আমাকে অনেক দূর আগাইয়া নিয়া যায়। ১৯৩৮ সালে দিল্লী কংগ্রেস কাউন্সিল অধিবেশন উপলক্ষে কমরেড রায়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়। তার আগে কমরেড রায়ের প্রতি আমার ভক্তি - শ্রদ্ধা ছিল নিতান্ত রোমান্টিক। বিশ্ব কমিউনিয়মের অন্যতম নেতা স্ট্যালিনের সহকর্মী হিসাবে তিনি ছিলেন আমার ধরাছোঁয়ার বাইরে এক মনীষী। তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর আমার ভক্তির রোমান্টিক দিকটার অবসান হইলেও শ্রদ্ধা - ভক্তি এতটুকু কমে নাই। বরঞ্চ বাড়িয়াছে। বাস্তব রাজনীতিতে অবশ্য তাঁর মতবাদ ও উপদেশ নির্ভরযোগ্য মনে করিতাম না। সক্রিয় রাজনৈতিক ব্যাপারে তাঁর মত ধৈর্য ছিল না। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায় প্রথম দিকে তিনি আমাকে কৃষক - প্রজা পার্টি ভাংগিয়া সমস্ত কর্মীদের লইয়া সদলবলে কংগ্রেসে যোগ দিবার পরামর্শ দেন। তাঁর উপদেশ অগ্রাহ্য করার পর তিনি নিজেই কংগ্রেস ত্যাগ করেন এবং আমরা কৃষক - প্রজা কর্মীরা কংগ্রেসে না যাওয়ায় আমাদের প্রশংসা করেন। কলিকাতার মুসলিম ছাত্রদের উদ্যোগে আহুত মুসলিম ইনস্টিটিউটের এক সভায় তিনি কংগ্রেসকে ' নিমজ্জমান নৌকা ' বলেন এবং উহা হইতে সাঁতরাইয়া পার হওয়ার জন্য দেশ - প্রেমিকদের অনুরোধ করেন। কিন্তু আদর্শগত দিক হইতে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে তাঁর বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত আমাকে বিস্মিত ও মোহিত করিয়াছিল। কংগ্রেস - মুসলিম লীগ - কমিউনিস্ট পার্টি কৃষক প্রজা পার্টির প্রভাবে ভারতের সকল গণ - প্রতিষ্ঠান যখন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ বলিতেছিলেন, তখন কমরেড রায় একাই ফ্যাসি - নাযিবাদকে মানবতার শত্রু ও সাম্রাজ্যবাদের চেয়ে বড় দুশমন প্রমাণ করেন এবং এই যুদ্ধকে গণযুদ্ধ বা ' পিপলস ওয়ার ' আখ্যা দেন। বিশ্বের একমাত্র সমাজবাদী রাষ্ট্র রাশিয়া হিটলারের সমর্থন করায় আমরা কমরেড রায়ের কথায় তখন বিশ্বাস করি নাই। তাঁর উপদেশ মানি নাই। পরে ১৯৪১ সালের জুন মাসে যখন হিটলার রাশিয়া আক্রমণ করেন এবং রাশিয়া জার্মানির বিরুদ্ধে রুখিয়া দাঁড়ায়, তখন কমরেড রায়ের কথার সত্যতায় এবং তাঁর জ্ঞানের গভীরতায় আমার শ্রদ্ধা আকাশচুনী হইয়া গেল।
১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষক - প্রজা সমিতির সেক্রেটারি ও আইন পরিষদে কৃষক - প্রজা পার্টির লীডার বন্ধুবর শামসুদ্দিন পদত্যাগ করার পর হক মন্ত্রিসভার সহিত কৃষক - প্রজা সমিতির সম্পর্ক আগের চেয়েও তিক্ত হইয়া পড়িল। ফলে আমার পক্ষে হক সাহেবের সহিত ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যাতায়াত রক্ষা করাও আর সম্ভব রহিল না। ১৯৩৯ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর ইউরোপে মহাযুদ্ধ বাধিয়া গেল। ভারতবাসীর বিনা অনুমতিতে ভারতবর্ষকে ইউরোপীয় যুদ্ধে জড়ানোর প্রতিবাদে সাতটি কংগ্রেসী প্রদেশ হইতেই কংগ্রেসী মন্ত্রী - সভারা ২২ শে ডিসেম্বর পদত্যাগ করিলেন। ইতিপূর্বে ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগ পীরপুর রিপোর্ট নামে একটি রিপোর্টে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা সমূহের মুসলমানদের উপর যুলুমের ফিরিস্তি প্রচার করিয়াছিল। কংগ্রেসী মন্ত্রীদের পদত্যাগকে মুসলিম লীগ কংগ্রেসী যুলুম হইতে মুসলমানদের নাজাত ঘৈাষণা করিয়া ২৩ শে ডিসেম্বর সারা ভারতে ‘ নাজাত দিবস ' পালন করে। এতে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে এবং হিন্দু - মুসলিম সম্পর্ক আরও তিক্ত হইয়া পড়ে। এমন সাম্প্রদায়িক তিক্ততার মধ্যে কৃষক - প্রজা সমিতির অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতিক রাজনীতি পরিচালন মুসলমান জনসাধারণ্যে খুবই কঠিন হইয়া পড়িল। তার উপর ১৯৪০ সালের ২৩ শে মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে ' পাকিস্তান প্রস্তাব ' গৃহীত হওয়ায় এবং স্বয়ং হক সাহেবই সেই প্রস্তাব উত্থাপন ও তার সমর্থনে মর্মস্পর্শী বক্তৃতা করায় বাংলার মুসলমানদের মধ্যেও পাকিস্তান দাবির ও মুসলিম লীগের শক্তি শতগুণে বাড়িয়া গেল। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সভা - সমিতি ও প্রচার - প্রচারণা অত্যন্ত কঠিন ও ব্যয়সাধ্য হইয়া পড়ায় কৃষক - প্রজা সমিতির মত গরিব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সভা সম্মিলন করা অসম্ভব হইয়া পড়িল। ফলে কৃষক - প্রজা সমিতির দাবিদাওয়া এবং হক মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে প্রচার - প্রচারণা কেবল মাত্র সমিতির দৈনিক মুখপত্র ’ ‘ কৃষকে’র পৃষ্ঠাতেই সীমাবদ্ধ হইল।
এখানেই শেষ নয়। ভারত বিভাজন যোগেন্দ্রনাথ ও ডঃ আম্বেদকর। বই (p.65) সেই সময় হিন্দুদের নিয়ে মুসলিম লীগ কি চিন্তা করছে ভালো করে পড়ুন। আজ অব্দি পাকিস্তানের রাজনীতিতে হিন্দুদের কোনো স্থান নেই। এর পরেও ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার চলে।
[7] “ পাকিস্তান হওয়ার বরং যুক্তি আছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বর্ণ হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানদের সংখ্যা - সাম্যের সুযোগ দেওয়া মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। আর অন্যান্য সংখ্যালঘুদের একত্রে চারটি আসনে সীমাবদ্ধ রাখাও আদৌ যুক্তিসংগত নয়। কারণ এঁদের ( হিন্দুদের ) মধ্যে একটি সম্প্রদায় হল তফসিলী যারা মুসলমানদের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের অনেক বেশি কাষ্ট হিন্দুদের সঙ্গে তুলনায় মুসলমানদের সমান দাবি যদি যুক্তিযুক্ত হয় তবে তফসিলীদের পক্ষে মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধিত্বের অন্ততঃ ৫০ ভাগ দাবি করা তো আরও যুক্তিযুক্ত। ”
[8] শুধু ভারত নয় সমগ্র পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সেদিন ডঃ আম্বেদকরকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাধুবাদ জানাতে পারেনি লীগ, মিঃ জিন্নাহ্ এবং তাদের বন্ধু মিঃ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। মিঃ জিন্নাহ্ বলেছিলেন, ' আমরা পাকিস্তানের দাবি থেকে এক ইঞ্চিও সরছি না। ' শুধু তা - ই নয়, ঐ সময়ে এক ব্যক্তিগত আলোচনা প্রসঙ্গে আকালি নেতা সর্দার বলদেব সিংহকে সঙ্গে পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মিঃ জিন্নাহ্। তাঁকে বলেছিলেন: “বলদেব সিং, এই দেশলাই বাক্সটি দেখছেন তো! এই আকারের পাকিস্তানও যদি আমাকে দেওয়া হয়, আমি তা সানন্দে স্বীকার করে নেব। কিন্তু আমি আপনার সহায়তা - প্রার্থী। আপনি যদি শিখদের মুসলিম লীগের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজী করাতে পারেন তাহলে আমরা এমন এক গৌরবজনক পাকিস্তান পাব যার দেউড়ি খাস দিল্লীতে যদি নাও হয় অন্ততঃ দিল্লীর কাছাকাছি হবে। ” শিখরা সেদিন মিঃ জিন্নাহ্র প্রস্তাব ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখান করেছিলেন তা ব্যাখা করার প্রয়োজন নেই। মিঃ জিন্নাহ্ যতদিন কংগ্রেসে ছিলেন ততদিন ধর্ম - বর্ণ - নির্বিশেষে সকল ভারতবাসীর নেতার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু যেদিন থেকে ইসলাম ভিত্তিক মুসলিম লীগে যোগদান করলেন যেদিন থেকে তাঁর চিন্তা - চেতনা ও নেতৃত্বের পরিধি সঙ্কুচিত হয়ে গেল। তিনি হলেন কেবল মাত্র লীগপন্থী মুসলমানদের নেতা। (p.66,67)
ভারত ভাগ ছিল একপক্ষ হিন্দুরা যতোটা ভারত ভাগের পক্ষে ছিল। তার থেকেও বেশি ছিল। সেই সময়ের মুসলিম সমাজ তারা গণতান্ত্রিক নয়। মনে মনে ইসলামিক রাষ্ট্রের কল্পনাই করেছিল। সেই বিষয় আর তথ্য প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বর্তমানে সেই দেশে দলিত দের অবস্থা দেখছেন। আর তথ্য দরকার হলে ডঃ আম্বেদকর পাকিস্তান নিয়ে বইটা পড়তে পারেন। সেখানে ডঃ আম্বেদকর লিখেছেন-
[9] What a Hindu is to a Muslim! To the Muslims a Hindu is a Kaffir. A Kaffir is not worthy of respect. He is low - born and without status. That is why a country which is ruled by a Kaffir is Dar - ul - Harb to a Musalman. Given this, no further evidence seems to be necessary to prove that the Muslims will not obey a Hindu government. The basic feelings of deference and sympathy, which predispose persons to obey the authority of government, do not simply exist. (Pakistan Or The Partition Of India)
এবং এটা শেষ নয়। ডঃ আম্বেদকর তার বিভিন্ন বইতে লিখেছেন। যে আমি যখন ভারতের দলিত ও অছুত মাহার সমাজ কে এমন একটি ধম্ম কথা বলেছি। তখন মূলনিবাসী মুসলিমরা এর বিরোধ করেছে। তারা বলেছে। আমরা ইসলাম ত্যাগ কে করে অন্য কোনো মতবাদ কে সমর্থন করতে পারবো না। আপনি আমাদের কাছে জীবন চাইলে দিতে পারি। কিন্ত ধর্ম ছাড়তে পারবো না। যতই আমরা লাঞ্ছিত হই না কেন। [ তারপর আমরা জানি ডঃ আম্বেদকর ইতিহাসে সব থেকে বড়ো ধর্মান্তরিত সভা করে। ডঃ আম্বেদকর বৌদ্ধ ধম্মের এক নতুন শাখা করে তার নাম নববৌদ্ধ যেখানে সবার সমান অধিকার আছে। তাই বলে এই লেখাতে আমি বৌদ্ধ ধম্ম সমর্থন করি না। এবং সংবিধানের সময়ও এটা দেখলো ভারতের মুসলিম সমাজ কতটা কুসংস্কার তথা ধর্মান্ধ। ডঃ আম্বেদকর লিখেছেন- ভারতের ব্রাহ্মণ সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অত্যাচার হাজার বছরের তার পরেও মুসলিম সমাজ শরিয়ার মতো আঘাতমূলক আইনের চিন্তা করে। যতটা না মনুস্মৃতি আমাদের বঞ্চিত করেছে। তেমনি শরিয়া আইন ও মুসলিমদের আমাদের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ডঃ আম্বেদকর আর লিখেছেন। ভারতের মুসলিমরা কোনোদিন ভারত কে ভালো বাসতে পারে না। তার কারণ ইসলাম এর অধিক দেয় না। ভারতের মূলনিবাসী ধর্মের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত তাহলেই ভারতের দলিতরা ব্রাহ্মণ্যবাদ থেকে বিচ্যুত হবে। (Pakistan Or The Partition Of India )
ইতিহাস কোনোদিন শেষ হবে না। ভারতের হিন্দুরা দেখেছেন তারা কি ভাবে বারবার আক্রান্ত হয়েছে। আর Rss এখানেই সেই সময়ের ইতিহাস কে ব্যবহার করে। নিজেদের অস্তিত্ব শক্ত করেছে। সেই সময়ের ভুল গুলি আজকের Rss ফায়দা দিচ্ছে। আপনারা যতবেশি অসাম্প্রদায়িকতার নামে ইতিহাস কে আলু কে ভাগ করবেন। Rss সেই আলু দিয়ে ইতিহাসের তরবারি করবে। আমরাই এক ভাবে ভুল ভাবে Rss কে শক্তিশালী করেছে। ভারতে যেমন ব্রাহ্মণ্যবাদের ফলে মানুষ সাম্প্রদায়িক ও অর্থনৈতিক ভাবে আক্রান্ত তেমনি ইসলামের জন্য বারবার মানুষ আক্রান্ত আর আপনাদের নীরবতা Rss কে শক্ত করে দেয়। মুসলিমদের হাতে অনার কিলিং হলে আপনারা চুপ থাকেন। আর উচ্ছ বর্ণ হিন্দুদের হাতে দলিত মরলে আপনারা মিছিল করেন। দিনের পর দিন একটি ধর্মীয় সমাজ ভুলের উপর ভুল করলে আপনারা চুপ থাকেন। এখনো চুপ থাকেন। একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনা দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করেন। যে কাজ Rss এর সেই কাজ আপনারা করে চলেছেন। ইতিহাস কে আর কত বিকৃত করবেন। সময় এসেছে সত্য ইতিহাসের মাধ্যমে ব্রাহ্মণ্যবাদ ও আরব্য সাম্রাজ্যবাদ কে দমানোর....
তথ্যসূত্র
1 || আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর - আবুল মনসুর আহমদ
2 || MARX NOTES ON INDIAN HISTORY
3 || ভারত বিভাজন যোগেন্দ্রনাথ ও ডঃ আম্বেদকর - শ্রীবিপদভঞ্জন বিশ্বাস
4 || Pakistan or The Partition Of India - B.R Ambedkar