জানো কি বেনীমাধব? সাদা কাপড় ওয়াশ করার পর কেন নীল রঙ বা উজালা ব্যবহার করা? কাপড় কাচার পর ডিটারজেন্ট (প্রায় সব প্রকার ডিটারজেন্ট এ সালফেটেড কোকোনাট অয়েল মনোগ্লিসারাইড (Sulphated Coconut oil Monoglyceride-৩১.৫% অ্যানহাইড্রাস সোডিয়াম সালফেট (Anhydrous Sodium Sulphate - 65.৯%) এ সালফার (S)এবং জলে আইরন লবন (FeSO4) থাকার জন্য জামাকাপড়ে একটু হলদে ভাব তৈরি হয়ে থাকে, নীল হলো হলুদ বর্ণের পরিপূরক, দুটি বর্ণ মিশে সাদা বর্ণের সৃষ্টি হয় এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে। এই কারণে উজালা বা ব্লু মেশানো হয়,
জানো কি বেণীমাধব, উচ্ছে বা করলা কেনো তেতো লাগে? করলা উচ্ছে এগুলো ফল জাতীয় সবজি। পাকলেও এর সব তেতো। কারণ এটা momordician গ্রুপের ফল, এই গ্রুপের আপেল, তরমুজ, স্কোয়াশ সব ই তেতো। কারণ এতে মোমোরডিসিন এবং কিউকারবিটাসিন biochemical থাকে, তার জন্য এই স্বাদ। তবে এলার্জি, শ্বাসকষ্ট, বাত ও ডায়াবেটিস নিরাময়ে momordicin দারুন কাজ করে।
মুলো খেলে পাদ হয় এই কথাটি কতটুকু সত্যি?
মূলার পাশাপাশি বাঁধাকপি পরিবারের সব সদস্যই অতিরিক্ত বাতকর্মের উদ্রেক করে। কারণ এগুলোতে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার থাকে যা মানুষের পরিপাকতন্ত্রে হজম হওয়া কষ্টসাধ্য । প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার পেটে গেলে বৃহদন্ত্র পর্যন্ত হজম না হয়ে চলে যায়। বৃহদন্ত্রে ফাইবারের হজম প্রক্রিয়া শুরু হলে প্রচুর গ্যাস উৎপন্ন হয় । ফাইবার ছাড়াও মূলায় ফ্রুকট্যান নামক শুগার থাকে । এই শুগারকে হজম করতে উৎসেচক (Enzyme) লাগে সেটা মানুষের পাকস্থলিতে নেই । এটাকে হজম করতে গিয়ে যে কর্মযজ্ঞ হয় তা হজম না হলেও প্রচুর গ্যাস তৈরি করে । এই জন্য মূলা খেলে অতিরিক্ত বাতকর্ম হয় ।
পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে জল পড়ে কেন?
পেঁয়াজে সালফারযুক্ত বিভিন্ন ধরণের যৌগ থাকে, এর মধ্যে একটি হল অ্যামিনো এসিড সালফোক্সাইড (amino acid sulfoxide)। পেঁয়াজ কাটলে এর কোষের ভেতরের অ্যালিনেজ (allinase) নামক এনজাইম বের হয়ে আসে, যা amino acid sulfoxides যৌগগুলোকে উদ্বায়ী সালফোনিক এসিড (sulfenic acid) এ পরিণত করে; যা চোখের জলের সংস্পর্শে আসামাত্র syn-propanethial-S-oxide নামক যৌগ তৈরী করে, এটিই চোখে জল আনার জন্য দায়ী। সহজ কথায়, চোখের জলের সংস্পর্শে মৃদু সালফিউরিক এসিড তৈরী হয়, তাই চোখ জ্বালাপোড়া করে।
এখানে উল্লেখ্য যে, জ্বালাপোড়া এর অনুভূতি কর্ণিয়ার উপরে থাকা free nerve ending (যেখানে অনেকগুলো স্নায়ু একত্রে এসে মিলিত হয়) এর মাধ্যমে মস্তিষ্ক সনাক্ত করে থাকে, তারপর সিলিয়ারি নার্ড (cilliary (nerve) দিয়ে এই অনুভূতি বাহিত হয়ে প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভ (parasympathetic nerves) হয়ে ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড (lacrimal gland)-কে উত্তেজিত করে। ফলে চোখ দিয়ে জল পড়ে।
দুধ গরম হওয়ার পরে উপচে পড়ে যায় কেন?
দুধের উপাদানগুলো হলোঃ
> জল ( ৮৭% )
> প্রোটিন (৪%)
ল্যাক্টোজ বা দুধের চিনি(৫%)
> মিনারেল ও অন্যান্য উপাদান।
যখন দুধ গরম করা হয় তখন মিনারেল, প্রোটিন, ফ্যাট উচ্চ তাপে ভেঙে আলাদা হয়ে যায়। এগুলো দুধের চেয়ে হালকা, তাই উপরে ভেসে ওঠে। একেই আমরা দুধের সর বা ক্রিম বলি।
তো উচ্চ তাপে কিছু পরিমাণ জল বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। কিন্তু কিছু সময় পরে উপরে যে ক্রিমের আস্তরণ আছে সেটা ভেদ করে আর বাষ্প বের হতে পারে না। কারণ এ ক্রিমের ফ্যাট,মিনারেলের স্ফুটনাংক জল অপেক্ষা বেশি। তাই ওগুলো জলের মতো ফুটতে শুরু করে না। সুতরাং, দুধের জলীয় বাষ্প তার উপরের স্তর ভেদ করতে না পারায় আটকে যায়।যতই তাপ দেয়া হয় ততই জলীয় বাষ্প উপরে উঠে আর এ বাষ্পীভূত বুদবুদ উপরে চাপ দেয়।আরও গরম করা হয় তখন জলীয় বাষ্প দুধের উপরের স্তরকে ঠেলে উপরে তুলে দেয়। এর কারণে দুধের সর ও কিছু দুধ উপচে পড়ে যায়।